রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে শুক্রবার (৯ মে) বিকেল থেকে উত্তাল হয়ে উঠেছে ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাজারো কর্মীর বিক্ষোভ। ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো’ দাবিতে তারা রাজপথে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন, এবং ঘোষণা দিয়েছেন—দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ মোড় ছাড়বেন না।
বিকেলে যমুনা ভবনের সামনে একটি সমাবেশ থেকে এই শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করেন ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ আন্দোলনের’ অন্যতম নেতা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। সমাবেশ শেষে বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হয় এই অবরোধ কর্মসূচি।
শাহবাগ মোড়ে সরেজমিন দেখা যায়, বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তুলেছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্লোগানগুলো হচ্ছে—“ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো”, “আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে”, “গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী”, “একটা একটা ছাত্রলীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর”। এই বক্তব্য ও স্লোগান থেকেই আন্দাজ করা যায় বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ ও প্রতিরোধের মানসিকতা কতটা গভীর।
আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
এই অবস্থান কর্মসূচির ফলে বিকেল থেকেই শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক মোড়টি অবরুদ্ধ হওয়ায় আশেপাশের বিকল্প রাস্তাগুলোতে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে, ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
বিক্ষোভকারীরা জানান, “আমরা কোনো নির্দিষ্ট সময় নয়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে।”
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে যমুনা ভবনের সামনে শুরু হয় অবস্থান, যা শুক্রবারের বিক্ষোভে রূপ নেয়। আন্দোলনকারীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে বলে জানা গেছে।
এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে দীর্ঘস্থায়ী এই অবরোধ কতদিন চলবে এবং কীভাবে এর সমাধান হবে, সে বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।