জাতীয় চার নেতাকে হত্যার দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের দাবি জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের ছেলে তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। সম্প্রতি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি আশ্বাস পেয়েছেন যে, তার দাবির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
সোমবার সোহেল তাজ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেন, “আজ সকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাকে ফোন করেছিলেন এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত তাজউদ্দীন আহমদ ও জাতীয় চার নেতার অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।” তিনি আরও জানান, ইউনূস পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন যাতে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে।
রোববার, সোহেল তাজ তিনটি দাবিতে একটি পদযাত্রা কর্মসূচি ডাকেন, যা প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের বাসভবন যমুনা অভিমুখে হওয়ার কথা ছিল। তবে, পদযাত্রা শুরুর আগে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের প্রতিনিধি তার স্মারকলিপি সংগ্রহ করে নেওয়ার পর পদযাত্রার প্রয়োজন পড়েনি।
সাকুরা রেস্টুরেন্টের সামনে উপস্থিত হয়ে সোহেল তাজ সাংবাদিকদের জানান, “এটি আমার শেষ পদযাত্রা। ব্যক্তিগতভাবে আমি লজ্জিত যে আমাকে এই দাবিগুলো নিয়ে পথে নামতে হচ্ছে।” তিনি উল্লেখ করেন, “এটি আমার পরিবারের জন্য নয়; বরং বাংলাদেশকে ভালোবেসে আমি এই পদযাত্রা করেছি। আমি চাই আমার সন্তান এবং আপনাদের সন্তান একটি সুন্দর বাংলাদেশ পাবে।”
সোহেল তাজের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যার দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের ব্যবস্থা করা; ১০ এপ্রিল ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করা; এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও জাতীয় চার নেতার অবদান পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা—সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামান—ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই কলঙ্কিত দিনটির স্মরণে সোহেল তাজের আন্দোলন দেশের ইতিহাসের প্রতি নতুন প্রজন্মের নজর আকর্ষণ করতে সহায়ক হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।