পূর্ণাঙ্গ রূপে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সড়কপথ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ২৩শে মে ২০২২ ০৯:৪৪ অপরাহ্ন
পূর্ণাঙ্গ রূপে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সড়কপথ

পূর্ণাঙ্গ রূপ পেলো পদ্মা সেতুর সড়কপথ। মূল সেতুর পর দুই প্রান্তের ভায়াডাক্টের কার্পেটিংও শেষ হয়েছে। এখন চলছে রেলিং ও রেলিংপোস্ট এবং দুই পাড়ে অস্থায়ী সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ।


জাজিরা প্রান্তের সাউথ ভায়াডাক্টে সোমবার (২৩ মে) বিকেলে কার্পেটিং সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সড়ক পথ পেয়েছে পূর্ণাঙ্গতা। মূল সেতুর পর এখন সংযোগ সেতুর কার্পেটিংও শেষ।


পুরো সেতু জুড়েই এখন ব্ল্যাকটপ। আর রাতে আলো ছড়াতে দুই পাশের প্যারাপেটের নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে ল্যাম্পপোস্ট। চলছে বিমানে আসা প্রথম ও দ্বিতীয় চালানের রেলিং ও রেলিংপোস্ট স্থাপন।


অন্যদিকে সমুদ্র পথে আসা রেলিংয়ের বড় চালানটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। সেতুতে রোড মার্কিং চলছে পুরোদমে। দুই পারে নাম ফলক ও ম্যুরালের কাজ শেষের দিকে এখন।


মঙ্গলবার (২৪ মে) জাজিরা প্রান্ত থেকে ম্যুরাল স্থাপন শুরু হচ্ছে। দুই পাড়ে বিদ্যুতের অস্থায়ী সাব স্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শুরু হয়েছে। আধুনিক টোল প্লাজাও প্রস্তুত হচ্ছে। সেতু খুলে দেয়ার এমন প্রস্তুতিতে দারুন খুশি পদ্মাপাড়ের মানুষ।


স্থানীয় কয়েকজন বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ যে কী খুশি হবে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সেতুটি চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে।


কার্পেটিং শুরু হয়েছিল গেল ১০ নভেম্বর। আর মূল সেতুর কার্পেটিং শেষ হয় ২৯ এপ্রিল। খুঁটিনাটি কাজ শেষ করে সেতু খুলে দেয়ার জন্য আগামী মাসের শেষ সপ্তাহেই পুরোপুরি প্রস্তত হবে।

 

পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রকল্পের শেষ পর্যায়ে এসেছি। ইতোমধ্যে আমরা সরকারকে জানিয়ে দিয়েছি যে, জুন মাসের শেষ সপ্তাহে পদ্মা সেতু খুলে দেয়া সম্ভব।’


মূল পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি ছাড়িয়েছে ৯৮ শতাংশ। সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৯৩ শতাংশের বেশি।


পদ্মা সেতু দেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে।


দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির উপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু।


পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।


খরস্রোতা পদ্মা নদীর উপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ হচ্ছে স্বপ্নের এ সেতু। ২০১৪ সালে নির্মাণ শুরু হওয়া দ্বিতল সেতুর সড়কপথ আসছে জুনে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার কথা রয়েছে।