ইরানের পার্লামেন্টের বেশ কয়েকজন সদস্য, দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলকে একটি চিঠি লিখেছেন, যেখানে আঞ্চলিকভাবে ইসরাইলি হুমকি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পরমাণু অস্ত্রের দিকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
চিঠিতে ৩৯ জন সংসদ সদস্য ইরানের প্রতিরক্ষা নীতি পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। চিঠির স্বাক্ষরকারী হাসান আলি আখলাঘি বলেন, “আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ইউরোপীয় দেশগুলো, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও ইসরাইলকে নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম। এই পরিস্থিতিতে ইসরাইল যে কোনো অপরাধ করে চলেছে। এ অবস্থায় আমাদের বাধ্য হয়েই এই চিঠি লেখার উদ্যোগ নিতে হলো।”
দুই দশক আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একটি ধর্মীয় রুলিং জারি করেছিলেন, যেখানে ইসলামী নীতির অধীনে পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে কট্টরপন্থিদের মধ্যে এই নীতির পরিবর্তনের আহ্বান বেড়েছে।
চিঠিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে ইরান তার প্রতিরক্ষা কৌশল এবং পরমাণু কর্মসূচি পুনর্বিবেচনা করতে প্রস্তুত। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সূচনা হতে পারে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে, এই চিঠিটি এমন সময় প্রকাশিত হয়েছে যখন ইসরাইল গাজার উপর ক্রমাগত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে হতাহতের সংখ্যা ৪২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। আহত ও পঙ্গু হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষ, এবং প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি গৃহহীন হয়ে পড়েছে। লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত হয়েছে আড়াই হাজার মানুষ এবং গৃহহীন হয়েছে ২০ হাজার লেবানিজ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের সংসদ সদস্যদের এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।