করোনায় স্বামীর মৃত্যু, চিকিৎসক-নার্সকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা !

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি -চাঁদপুর
প্রকাশিত: শুক্রবার ৬ই আগস্ট ২০২১ ০৮:১৮ অপরাহ্ন
করোনায় স্বামীর মৃত্যু, চিকিৎসক-নার্সকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা !

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দেলোয়ার হোসেন (৬৫) নামের এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকাহত স্ত্রী কুলসুমা বেগম হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সসহ কয়েকজনকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা করেন। 



শুক্রবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় করোনা ইউনিটে এ ঘটনার পর কুলসুমা বেগম অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। মৃত দেলোয়ার হোসেন চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রুপসা গ্রামের জালাল বাশারের ছেলে।



প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কুলসুমা বেগম গত দুই দিন আগে তার করোনা আক্রান্ত স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ভর্তি হওয়ার পর থেকে কোনও আত্মীয়-স্বজন খোঁজ-খবর না রাখায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। এদিকে দেলোয়ার হোসেনের অক্সিজেন লেভেলও কমে যায়। সবমিলিয়ে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।



শুক্রবার বেলা ১২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা ইউনিটে দেলোয়ারের মৃত্যু হয়। চোখের সামনে স্বামীর মৃত্যু দেখে শোকে ফল কাটার ছুরি নিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও আশপাশের কয়েকজনকে ধাওয়া করেন কুলসুমা। 




সেই সঙ্গে হাসপাতালে থাকা অন্যান্য রোগীর স্বজনদেরকেও ভয় দেখান। কয়েক মিনিট ধরে ছুরি নিয়ে ধাওয়া করে এক সময় নিজেই জ্ঞান হারিয়ে মেঝেতে পড়ে যান।



খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহরিন ঘটনাস্থলে এসে ওই নারীকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। 



দেলোয়ার হোসেনের স্বজনরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কুয়েতে ছিলেন তিনি।  চিকিৎসার জন্য গত চার-পাঁচ বছর আগে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। গত বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।



চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, দেলোয়ার হোসেন গত দুই দিন আগে করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।



তিনি আরও বলেন, দেলোয়ার মারা যাওয়ায় তার স্ত্রী শোকাহত হয়ে পড়েন। পরে ফল কাটার একটি ছুরি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করেন। এতে হাসপাতালে থাকা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে কারও ওপর হামলা করার আগেই উপস্থিত কয়েকজন তাকে ধরে ফেলেন।