প্রকাশ: ৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:২০
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। বুধবার (৬ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিচার শুরুর আদেশ দেন।
গত ৩০ জুলাই এই মামলায় পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা অব্যাহতির আবেদন করে শুনানি করেন। তবে ওইদিন ট্রাইব্যুনাল আদেশ দেওয়া স্থগিত রাখলেও আজ ৩০ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেন।
এ মামলার ছয় গ্রেপ্তারকৃত আসামির মধ্যে রয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক এএসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী। তারা বর্তমানে ট্রাইব্যুনালের কারাগারে রয়েছেন।
প্রসিকিউশন গত ৩০ জুন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে এবং সেদিনই ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গৃহীত হয়। এই মামলায় পলাতক আসামিদের বিচারের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এই হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে এবং জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ হিসেবে আবু সাঈদের নাম ইতিহাসে স্থান পায়।
এদিকে এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী রিনা মুর্মু।
সাক্ষ্য দিতে হাজির করা হয়েছে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে, যিনি বর্তমানে রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনজনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া এই মামলাটি বর্তমান সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত মামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।