প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৬:২১
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও জঘন্য অপরাধ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত শীর্ষ পর্যায়ের আসামিদের বিচারকাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তিনি এই মন্তব্য করেন মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বিচার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায়।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, গণহত্যার বিচার মোবাইল কোর্ট নয় যে, দ্রুত রায় দিয়ে ফেলা যাবে। এই বিচার আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, সময় নিয়ে ও প্রতিটি বিষয় খুঁটিনাটি বিবেচনা করে করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার বা আন্তর্জাতিক মহল এই বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।
তিনি আরও জানান, আগামী ৩ আগস্ট থেকে প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে এবং সে দিনই প্রথম সাক্ষী হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করা হবে। তিনি মন্তব্য করেন, কেবল গুলি চালানো ব্যক্তি নয়, বরং যে গণভবনে বসে নির্দেশ দিয়েছে সেই-ই প্রকৃত অপরাধী এবং বিচারের মুখোমুখি হওয়া উচিত।
তাজুল ইসলাম বলেন, তদন্ত সংস্থায় যারা কাজ করছেন, তারা অধিকাংশই পুলিশের চাকরিতে থেকেও বিগত সরকারের সময়ে বঞ্চনার শিকার ছিলেন। তাঁদের মধ্য থেকে বাছাই করে এই বিশেষ তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে, যাতে নিরপেক্ষ ও নির্ভুল তদন্ত নিশ্চিত করা যায়। তিনি বলেন, স্বৈরাচার বা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে তাদের প্রস্তুত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারক, প্রসিকিউটর ও আইনবিদরা। আলোচনার পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ১৯ জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ এবং মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে নিহতদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে ‘জুলাই কার্নেজ’ নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্র ‘ট্রায়াল অব জুলাই কার্নেজ’ প্রদর্শন করা হয়, যা অংশগ্রহণকারীদের আবেগপ্রবণ করে তোলে। অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার বিচার সংক্রান্ত বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
এই আলোচনা সভার মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হলো, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানে বিচার নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে এবং ইতিহাসের নির্মম অধ্যায়গুলোর সঠিক বিচার নিশ্চিতে অগ্রসর হয়েছে।