প্রকাশ: ৯ জুলাই ২০২৫, ২২:৪৩
আশাশুনি উপজেলা দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তার কার্যালয়সহ অন্তত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস এখন পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে চলছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকে, আর একটানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পুরো এলাকা পরিণত হয় জলাবদ্ধ চত্বরে। অফিসপ্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে আশপাশের রাস্তা ও ভবনের সামনের জায়গাগুলো এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
অফিসে যেতে হলে পায়ে পানি ডুবিয়ে বা জুতা খুলে প্রবেশ করতে হচ্ছে কর্মকর্তা, কর্মচারী, গ্রাহক, রোগী ও সাধারণ মানুষদের। উপজেলা পরিষদের মূল গেটের সামনেই দারিদ্র বিমোচন কার্যালয়টি অবস্থিত, যা প্রায় সারা বছরই আংশিকভাবে পানির মধ্যে থাকে। বৃষ্টির মৌসুমে অবস্থা আরও করুণ হয়ে ওঠে, কখনো কখনো অফিসকক্ষেও পানি ঢুকে পড়ে।
গত ৭/৮ দিনের টানা বৃষ্টির ফলে আশেপাশের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, শহীদ মিনার ও স্মৃতি সৌধ চত্বর এখন সম্পূর্ণভাবে জলমগ্ন। অফিসের ভেতরে পানি জমে থাকা অবস্থায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি নিশ্চিত রাখা যেমন কঠিন, তেমনি সাধারণ গ্রাহকদেরও অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পানির সঙ্গে ভেসে বেড়ানো পোকামাকড় ও দুর্গন্ধ আরও বিপদ বাড়াচ্ছে।
উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের গেট থেকেও এখন প্রবেশ করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। রাস্তার ২০/৩০ হাতজুড়ে পানি জমে আছে, যা জোড়াসাঁকো পার হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি করেছে। একইভাবে বিআরডিবি ভবন ও প্রেস ক্লাবের সামনেও বৃষ্টির পানির কারণে চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিদিন এইসব গুরুত্বপূর্ণ অফিসে হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা, উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কাজে যান। কিন্তু এই জলাবদ্ধতা তাদেরকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির মধ্যে ফেলছে। যারা রাস্তাঘাটে চলাচল করছেন, তাদের অভিজ্ঞতা বলছে—এ যেন পানির ভেতরেই জীবনযাপন।
পানির জন্য শুধু ভোগান্তিই নয়, নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের চলাচলে চরম বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এমন দুর্দশার চিত্র দীর্ঘদিনের হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, সামান্য সহানুভূতি এবং দ্রুত সমাধানমূলক পদক্ষেপ নিলেই এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি সম্ভব। তারা উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।জনসাধারণের আকুতি, আশাশুনিকে বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।