বিএসএফ আটক করলো সাবেক বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ ইলিয়াস আলী - জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: বুধবার ১৫ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৭:০০ অপরাহ্ন
বিএসএফ আটক করলো সাবেক বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা

ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গত ১৪ জানুয়ারি রাতে বাংলাদেশি সাবেক সেনা কর্মকর্তা আলিমুর রেজা (৪৫) কে আটক করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের বেউরঝাড়ি সীমান্তে, যেখানে বিএসএফ তাকে সীমান্তের কাছ থেকে ধরে নিয়ে যায়। 


বিজিবির ঠাকুরগাঁও-৫০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানজীর আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে বেউরঝাড়ী বিওপি এলাকার সীমান্ত পিলার ৩৮০/৪-এস থেকে ৩০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে "বড়বিল্লা" নামক স্থানে বিএসএফের ১৫২ নম্বর ক্যাম্পের টহলদল আলিমুর রেজাকে আটক করে। 


বিজিবি কর্মকর্তারা আরো জানান, আটককৃত বাংলাদেশি নাগরিকের নাম মোঃ আলিমুল রহমান, পিতার নাম ডাঃ রহমান, তিনি খুলনা জেলার বাসিন্দা। বিএসএফ ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগের পর ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করা হয়। এর পর বিএসএফ জানায়, আলিমুর রেজাকে ভারতের গোয়ালপুকুর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। 


বিএসএফের ১৫২ ব্যাটালিয়ান কমান্ডেন্ট জানান, আটককৃত ব্যক্তি একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। তার নাম্বার যাচাই করার পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫৭ নম্বর কোর্সের লেফটেন্যান্ট পদে অবসর নিয়েছেন। 


এদিকে, বিজিবি কর্তৃপক্ষ জানায় যে, ঘটনাটি ঘটার পরই তারা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে যাতে আলিমুর রেজাকে ফেরত আনা যায়। বিজিবি টহলদলও পরিস্থিতি অনুসন্ধানে কাজ করছে।


বিজিবি কর্মকর্তারা বলেন, "আলিমুর রেজা ভারতের তারকাঁটার বেড়া অতিক্রম করে শূন্য রেখা পার করার সময় বিএসএফ তাকে আটক করেছে। আমরা ঘটনার তদন্ত ও তার ফেরত আসার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।"


এ ঘটনা নিয়ে সীমান্তের দুটি দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে এই ধরনের ঘটনার ওপর নজর রাখতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা এড়ানো যায়।


তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ তাদের এলাকায় সীমান্তের কাছাকাছি এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। 


বিএসএফের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, তাদের অভিযান এবং সীমান্ত নজরদারি আরও শক্তিশালী করা হয়েছে, যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। বিজিবি কর্তৃপক্ষও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে পারে।


এই ঘটনার পর, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তা এবং দুই দেশের সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।


এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয়রা ঘটনাটি নিয়ে চুপচাপ রয়েছেন। তারা আশা করছেন যে, দ্রুত সময়ের মধ্যে উক্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফেরত আসবেন এবং তার বিরুদ্ধে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না।