জুলাই-আগস্টের গণহত্যা এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি তার জামিন আবেদন করলে বাদীপক্ষ তার জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক শোনার পর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইমরান আহমেদ আদালত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি গত ৫ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যা নিয়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তার ওই মন্তব্যের মধ্যে ছিল ১৯৭১ সালের গণহত্যা এবং সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্য। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল, তিনি নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
ফেসবুকে তার এসব মন্তব্যের ফলে তিনি একটি মানহানির মামলার শিকার হন। গত ৮ অক্টোবর গণঅধিকার পরিষদের সদস্য আবু হানিফ বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেন। আদালত ওই দিনই আসামিকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে হাজির হতে সমন জারি করে।
মামলার আবেদন সূত্রে জানা যায়, তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির ফেসবুক পোস্টে "সরকার উৎখাতের হুমকি" এবং "সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত সরকারের প্রধানকে অবমাননা" করার অভিযোগ আনা হয়। এর ফলে জনমনে ভীতি সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি, একটি গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিষ্ঠিত প্রধানের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
গত ৬ অক্টোবর তার বিতর্কিত মন্তব্যের পর প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। এরপর থেকে তিনি আদালতের নির্দেশে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিন লাভ করেন।
এ ঘটনাটি বাংলাদেশে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যেখানে একদিকে তাদের পেশাগত দায়িত্ব ও আনুগত্যের প্রশ্ন ওঠে, অন্যদিকে ব্যক্তিগত মতামতের স্বাধীনতার সীমা নির্ধারণের বিষয়টি সামনে চলে আসে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।