প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২২, ০:৩৭
প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তি ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে রাজবাড়ী মহিলা দলের সদস্য ও রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া আক্তার স্মৃতি ইসলামকে (৩৫) জামিন নামঞ্জুর করেছে রাজবাড়ী বিজ্ঞ আদালত।
সোমবার (১০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক নম্বর আমলি রাজবাড়ী জেলা আদালতে স্মৃতির জামিনের আবেদন করা হয। বিচারক কায়ছুন নাহার সুরমা জামিন নামঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী তসলিম উদ্দিন আহমেদ।
এর আগেও বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজবাড়ীর ১নং আমলী আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করা হয় এবং রাজবাড়ী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কায়ছুন নাহার সুরমা এ রায় দেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে রাজবাড়ী পৌরসভার ৩নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সোনিয়া আক্তার স্মৃতি রাজবাড়ী পৌরসভার ৩নং বেড়াডাঙ্গা এলাকার মো. খোকনের স্ত্রী। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাব’ নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও রাজবাড়ী মহিলা দলের সদস্য।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত (৩১ আগষ্ট) দুপুরে তিনি তার নিজস্ব আইডি দিয়ে ফেসবুক চালানোর সময় ‘Sonya akter smrity’ নামের একটি আইডিতে “একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে সাবেক ৩ বারের প্রধানমন্ত্রীকে যেভাবে কুরুচী শীল বক্তব্য দিলেন। দিলেন বললে ভুল হবে, উনি মাঝে মাঝেই এমন দূর্গন্ধ যুক্ত কথা বলেন। তাকে আপনি আপনার জায়গা মানুষ হিসাবে কোন জায়গায় রাখবেন। ?? এই কথাগুলো শুনে তার মন্ত্রীমহোদয়েরা হাত তালি দেয়। ভদ্রতা পারিবারিক শিক্ষা, যেটা ওনাকে কেউ শিখাতে পারে নাই। বাবা/মা সুসন্তান জন্ম না দিলে কবরে গিয়েও গালি শুনতে হয়।” এই রকম গুজবমূলক পোষ্ট দেখতে পান মামলার বাদী।
মামলার বাদী সামসুল আরেফিন চৌধুরী রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক। এক মাস আগের ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে এখন অভিযোগ করার কারণ জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতা সামসুল আরেফিন চৌধুরী বলেন, ‘সোনিয়া আক্তার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আপত্তিকর কথা বলেন। এই পোস্ট মাসখানেক আগে দিয়েছে। অন্য একটি স্ট্যাটাস দেখতে গিয়ে এটি দেখতে পেয়েছি। তা ছাড়া এ–সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে সময় লেগেছে।’ তিনি আরো বলেন, স্মৃতি ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে সরকারের উন্নয়ন ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে করুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। সরকারের উন্নয়ন নিয়ে গুজব ছড়ায়।এ বিষয়টি আমার নজরে আসায় আমি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিলে তারা আমার অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকোর্ড করে।
সোনিয়া আক্তারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর পরদিন তাঁর বাড়িতে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দরা। নেতৃবৃন্দরা তাঁর দুই শিশুসন্তান ও পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন। তাঁর পাশে থেকে জামিনের জন্য সকল প্রকার আইনী সহায়তা দেবার আশ্বাস দেন। অপর দিকে সোনিয়া আক্তারের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদী সমাবেশ করে রাজবাড়ী জেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।