প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১১:১৪
নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি অনুমোদনের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের আদেশ স্থগিত করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ। রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন, যা বিচার বিভাগীয় শৃঙ্খলা নিয়ে চলমান আলোচনা ও আইনি প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করল।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা-২০১৭ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর। এরপর ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এই বিধিমালা অনুমোদনের আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে গত মাসে আইনজীবী শিশির মনিরসহ আটজন আইনজীবী পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন, যা গত ২১ মে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে শুনানির জন্য ওঠে এবং পরবর্তী সময়ে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির ও সাদ্দাম হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদ উদ্দিন। আদালত পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করে রিভিউ আবেদনের আদেশ স্থগিত করেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য বিষয়টি তালিকাভুক্ত করেন।
এই শৃঙ্খলাবিধির পেছনের ইতিহাস মাসদার হোসেন মামলার রায়ে নিহিত। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ যে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়, তার ভিত্তিতেই বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব থেকে মুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় আইন মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে বিধিমালার একটি খসড়া সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়।
তবে খসড়াটি ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালার অনুরূপ হওয়ায়, তা মাসদার হোসেন রায়ের পরিপন্থী বলে আপিল বিভাগ মত দেয়। এরপর সুপ্রিম কোর্ট কমিটি সংশোধনী এনে খসড়া অনুমোদনের পথ প্রশস্ত করে, যার ভিত্তিতে গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন সময়ে প্রধান বিচারপতিদের ভূমিকা ও সরকার‑সুপ্রিম কোর্টের সমন্বয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শৃঙ্খলাবিধি বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতার বিষয়টি নিশ্চিত না হলে বিচার বিভাগের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার সম্ভব নয়।
এই রিভিউ স্থগিতাদেশ আদালতের স্বাধীনতা, নিয়মতান্ত্রিকতা ও প্রভাবমুক্ত বিচার ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মেটা কি-ওয়ার্ডস:
হ্যাশট্যাগ: #বিচারবিভাগ #শৃঙ্খলাবিধি #আপিলবিভাগ #মাসদারহোসেন #ইনিউজ৭১ #enews71