নওগাঁয় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: সোমবার ১৩ই ডিসেম্বর ২০২১ ০৯:০৩ অপরাহ্ন
নওগাঁয় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন

নওগাঁর মহাদেবপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে নাসির উদ্দীন ওরফে নান্নু নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১০ বছর কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১- এর বিচারক এবিএম গোলাম রসুল এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামি নাসির উদ্দীন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নাসির উদ্দীন জেলার মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।


রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারি সরকারি কৌঁসুলী সঞ্জীব সরকার এবং আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী এমরান হাসান চৌধুরী।


মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে নাসির উদ্দীন সাথে স্বরসতীপুর গ্রামের আব্দুস কুদ্দুসের মেয়ে পারুল আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১১ বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। এজাহার বর্ণিত ঘটনার ১০ মাস আগে কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের ময়নুদ্দিনের মেয়ে শারমিন আক্তারকে গোপনে বিয়ে করেন নাসির উদ্দীন। পরবর্তীতে পারুল আক্তার দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানার পর স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের হয়। এই ঘটনার জেরে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া লেগেই থাকত।


পারিারিক কলহের জেরে পারুল আক্তারকে মাঝেমাঝেই শারিরীক নির্যাতন করতেন স্বামী নাসির উদ্দীন। ২০১৮ সালের ১২ জুন রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৭টার কোনো এক সময় নাসির উদ্দিন তার স্ত্রী পারুল আক্তারের ঘাড় মটকিয়ে ও পরে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন। স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন বলে লোকজন জানিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের চেষ্টা করেন।

 

এ ঘটনায় মৃত পারুল আক্তারের মামা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসা পারুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামি নাসির উদ্দীন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তশেষে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন স্বাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।