ডিজেলের দাম বাড়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরো চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর চরাঞ্চলের কৃষক সহ প্রান্তিক কৃষক। ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার আশংকা কৃষকদের। এতে অনেক কৃষক বোরো চাষ কমিয়ে দেবেন। কৃষি বিভাগ বলছে কৃষি যান্ত্রিকী করণ ও পর্যায়ক্রমে ভেজানো এবং শুকানো (অল্ট্রানেটিভ ওয়েটিং অ্যান্ড ড্রাই) পদ্ধতি ব্যবহারে বোরো চাষে কৃষকের সেচ খরচ কমবে।
ভূরুঙ্গামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ২১২ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে কৃষকরা ১ হাজার ৮৬ টি বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প ও ৪ হাজার ৮৫৫ টি ডিজেল ইঞ্জিন চালিত সেচ পাম্প ব্যবহার করে বোরো চাষ করবেন।
দুধকুমার নদের তীরবর্তী এলাকার কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে চরাঞ্চলের প্রতি বিঘা (৩২ শতাংশ) জমিতে ধান চাষ করতে ডিজেল ইঞ্জিন চালিত সেচ পাম্প দিয়ে গড়ে ৪৫ থেকে ৫০ বার সেচ দিতে হয়। সেচ দিতে গড়ে প্রায় ৫০ লিটার ডিজেলের প্রয়োজন হয়। ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার বিঘা প্রতি প্রায় ১ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হবে। এতে অনেক কৃষক বোরো চাষ কমিয়ে দেবেন।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, দুধকুমার নদের বুকে জেগে ওঠা জমিতে বোরো ধান চাষের প্রস্তুতি চলছে। চরের জমিতে সকালে সেচ দিলে বিকেলেই শুকিয়ে যায়। প্রায় প্রতিদিন সেচ দিতে হয়। ধান পাকার পূর্ব পর্যন্ত এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে গড়ে ৫০ লিটার ডিজেল লাগে। ডিজেলের দাম বাড়ে যাওয়ায় বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ ৭৫০ টাকা বেড়ে যাবে।
ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের কামাত আঙ্গারীয়া গ্রামের কৃষক শাহাদত ব্যাপারী জানান, ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় জমি চাষ করার খরচ বেড়ে গেছে। আগে মেশিন (পাওয়ার টিলার/ট্রাক্টর) দিয়ে এক বিঘা জমি চাষ করতে ৮০০ টাকা লাগতো। এখন ১ হাজার টাকা লাগছে।
পাওয়ার টিলার মালিক খবিরুল ইসলাম জানান, ডিজেলের দাম সহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় এক বিঘা জমি চাষ করতে ১ হাজার টাকা নিচ্ছে পাওয়ার টিলার মালিকরা।
কুড়িগ্রামের মেসার্স সাহা ফিলিং ষ্টেশনের স্বত্বাধিকারী রিনটু সাহা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ায় ডিজেল ৬৫ টাকা ৫২ পয়সার পরিবর্তে ৮০ টাকা ৫২ পয়সায় বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, কৃষি যান্ত্রিকী করণ, সেচের পানির অপচয় রোধ ও পর্যায়ক্রমে ভেজানো এবং শুকানো (অল্ট্রানেটিভ ওয়েটিং অ্যান্ড ড্রাই) পদ্ধতি ব্যবহার বোরো চাষের সেচ ব্যয় কমাতে সাহায্য করবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।