ব্রাজিল প্রেসিডেন্টের হুমকি সাংবাদিককে ঘুষি মেরে মুখ ভাঙার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সোমবার ২৪শে আগস্ট ২০২০ ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
ব্রাজিল প্রেসিডেন্টের হুমকি সাংবাদিককে ঘুষি মেরে মুখ ভাঙার

করোনাভাইরাস মহামারির পর একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। এবার এক সাংবাদিককে হুমকি দিয়েছেন তিনি। সবার সামনে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তার নাকি ঘুষি মেরে ওই সাংবাদিকের মুখ ভেঙে দিতে ইচ্ছে করছে। তার কারণ, ওই সাংবাদিক বলসোনারোর স্ত্রীর একটি বেআইনি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন।

ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার। প্রতি রবিবারই ব্রাসিলিয়ার মেট্রোপলিটন ক্যাথিড্রালে প্রার্থনা করতে যান বলসোনারো। তারপরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানেই ছিলেন ওই সাংবাদিক। তিনি ব্রাজিলের ‘ও গ্লোবো’ নামের একটি সংবাদসংস্থার সাংবাদিক। খবর দ্য ওয়ালের।

জানা গিয়েছে, সেখানেই দেশের করোনা পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বলসোনারোকে সবাই প্রশ্ন করতে থাকেন। সব প্রশ্নেরই জবাব দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই তাল কাটে। একটি আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে নাম জড়িয়েছে বলসোনারোর স্ত্রীর। সেই বিষয়েই প্রশ্ন করে ওই সাংবাদিক বলসোনারোর প্রতিক্রিয়া চান। তখনই রেগে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমার খুব ইচ্ছে করছে ঘুষি মেরে তোমার মুখ ভেঙে দিতে'।ক্যামেরার সামনে একজন সাংবাদিককে এই ধরনের হুমকি দেওয়ায় সেখানে উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরা তার প্রতিবাদ শুরু করেন। কিন্তু কোনো কথায় কান না দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যান বলসোনারো। আর কোনো মন্তব্যও করেননি তিনি।

ও গ্লোবোর ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন একটি রিপোর্টের প্রসঙ্গে। ক্রুসো নামের একটি ম্যাগাজিনে একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ব্রাজিলের ফার্স্ট লেডি মিশেল বলসোনারো, প্রেসিডেন্টের বন্ধু তথা অবসর নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা ফ্যাব্রিসিও কুইরোজ ও প্রেসিডেন্টের ছেলের প্রাক্তন উপদেষ্টা ফ্ল্যাভিও বলসোনারো একটি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত।

ইতিমধ্যেই অবশ্য কুইরোজ ও ফ্ল্যাভিওকে আটক করে জেরা শুরু করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে বলসোনারো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে পর্যন্ত একটি প্রকল্পের আওতায় রিও ডি জেনেইরোর অনেক সরকারি কর্মীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা। সেই টাকা ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মিশেল বলসোনারোর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ওই ম্যাগাজিন। যদিও এই বিষয়ে মিশেল বলসোনারোর তরফে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

প্রেসিডেন্টের এই হুমকির পরে ও গ্লোবো-র তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, 'আমাদের সংবাদপত্রের এক সাংবাদিক, যিনি শুধুমাত্র নিজের কাজ করছিলেন, তার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত কারণে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এর থেকেই প্রমাণিত একজন জন প্রতিনিধি হওয়ার দায়িত্ব পালন করেন না বলসোনারো। তাই মানুষের কাছেই তাকে জবাবদিহি করতে হবে।'