ধর্ষণে বাধা, কিশোরীকে পুড়িয়ে মেরে ফেলল বর্বররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৫শে জুন ২০২০ ১০:২৮ পূর্বাহ্ন
ধর্ষণে বাধা, কিশোরীকে পুড়িয়ে মেরে ফেলল বর্বররা

দু'জনের যৌন লালসার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে বাধা দিয়েছিল কিশোরী।  ভারতের ছত্তীসগঢ়ের বেমেতারা জেলার এক কিশোরীর কাছ থেকে এমন প্রতিরোধ সহ্য হয়নি বর্বরদের। 

ক্ষুব্ধ হয়ে বর্বররা ওই কিশোরীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। নিজের সম্ভ্রম রক্ষার জন্য শেষ পর্যন্ত আগুনে পুড়ে মরতে হলো ছত্তীসগঢ়ের বেমেতারা জেলার ওই কিশোরীকে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর ছত্তীসগঢ় পুলিশ গতকাল বুধবার জানিয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত দুই অভিযুক্তের একজন কিশোর।

জানা গেছে,  বেমেতারার দধি থানার অন্তর্গত অখ্যাত এক গ্রামে ২২ জুন আগুন দেওয়া হয়েছিল কিশোরীর গায়ে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছিল রায়পুরের এক হাসপাতালে। ২৪ জুন বুধবার ওই হাসপাতালেই চিকিত্‍‌সাধীন অবস্থায় মারা যায় বেমেতারার কিশোরী।

বেমেতারার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিমল বাইস জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্তদের এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ আটকদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসা শেষ হলেই পুলিশ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেবে।

পুলিশ সুপার জানান, দুই অভিযুক্তের একজনের বয়স ২২ বছর এবং অন্যজনের গোঁফের রেখাও বের হয়নি। তার বয়স মাত্র ১৩ বছর। এই দু'জনে সোমবার ২২ জুন ওই কিশোরীকে গ্রামের মধ্যে নিরিবিলি এক জায়গায় ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু কিশোরী সর্বশক্তি দিয়ে নিজেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে যায়। 

ফলে, শেষপর্যন্ত নিজেদের লালসা পূর্ণ করতে পারেনি ঠিকই। তবে, কিশোরীকে পুড়িয়ে মারার ছক কষে তারা। আগে থেকে কেরোসিন তেলও ব্যবস্থা করে রেখেছিল। হাত-পা পিছমোড়া করে বেঁধে, গায়ে কেরোসিন ঢেলে, মুহূর্তে দিয়াশলাই মেরে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়।

নির্জন এলাকা হওয়ায় অভিযুক্তরা ধরেই নিয়েছিল কেউ কিচ্ছু জানতে পারবে না। তাদের অপরাধও লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে যাবে। কিন্তু, আগুনে পুড়তে থাকা কিশোরীর আর্তনাদ কানে যায় গুটিকয় গ্রামবাসীর। 

তারাই অগ্নিদগ্ধ কিশোরীকে নিয়ে যান স্থানীয় হাসপাতালে। অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় পাঠানো হয় রায়পুরে। বুধবার রায়পুরের হাসপাতালে মারা যায় কিশোরী। তার আগে কিশোরীর মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করেন এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট।

সেই জবানবন্দির ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা ছাড়াও যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা দিতে তৈরি আইন 'পকসো'র আওতায় পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। 

পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে।