প্রকাশ: ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৬
ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে গাজার জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে সমুদ্রপথে যাত্রা করেছে ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’। এই অভিযানে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ মানবাধিকারকর্মী ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ রুহি লোরেন আখতার। তিনি ইংল্যান্ডের নর্থাম্বারল্যান্ডের মোরপেথে জন্মগ্রহণ করেন এবং বর্তমানে মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি অর্জন করেছেন।
রুহি লোরেন আখতার গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এ অভিযানের সঙ্গে যুক্ত আছেন। বুধবার ১ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তিনি তার বর্তমান অবস্থান জানান। রুহি লিখেছেন, তিনি ‘সামারটাইম জং’ নামের একটি জাহাজে অবস্থান করছেন, যা ফ্লোটিলার প্রধান নৌবহরের জাহাজগুলোর ঠিক পেছনে রয়েছে।
তার বাবা কাপ্তান মিয়া বিলাত প্রবাসী একজন বাংলাদেশি। রুহি যুক্তরাজ্যের মোরপেথে জন্মগ্রহণ করে বড় হয়েছেন এবং বর্তমানে এলসউইক ওয়ার্ডে বসবাস করছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মানবিক সহায়তা ও অধিকারকর্মে জড়িত রয়েছেন।
নিজের ফেসবুক পোস্টে রুহি লোরেন উল্লেখ করেন, চরম অনিশ্চয়তার মধ্যেও তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও আশার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন। তার ভাষায়, এই নৌবহরের দলটি গাজার জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার শেষ চেষ্টা করছে, যদিও তাদের সামনে ইসরায়েলি বাধার ঝুঁকি রয়েছে।
রুহি লোরেন আখতার ‘রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড ব্যানানাস’ নামের একটি মানবিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। যুদ্ধ ও সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত মানুষদের খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, দক্ষতা উন্নয়ন ও নেতৃত্ব প্রশিক্ষণের মতো কার্যক্রমের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করে এই সংস্থা।
বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠিত সংস্থার কার্যক্রম গাজা ও গ্রিসে পরিচালিত হচ্ছে। বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর পাশে থাকার এই উদ্যোগের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালের অক্টোবরে নর্থ ইস্ট বাংলাদেশি অ্যাওয়ার্ডে তিনি ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ সম্মাননা লাভ করেন।
‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ হচ্ছে গাজার মানুষের জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক উদ্যোগ। এই বহরে যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের নাগরিকসহ ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ প্রতিনিধি রয়েছেন। এর মধ্যে আছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত সদস্য, আইনজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও মানবাধিকারকর্মীরা।
বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই অভিযানের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার প্রতীকী বার্তা দিচ্ছেন। বাংলাদেশের রুহি লোরেন আখতার সেখানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ায় বিশ্ব অঙ্গনে নতুন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।