প্রকাশ: ২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৪
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপকূলে যাওয়ার পথে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ১৩টি নৌযান অবৈধভাবে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে এই অভিযানে ৩৭টি দেশের দুই শতাধিক অধিকারকর্মীকে আটক করে নিজেদের বন্দরে নিয়ে গেছে দখলদার বাহিনী।
সংগঠনের মুখপাত্র সাইফ আবু কেশেক জানিয়েছেন, আটক হওয়া যাত্রীদের মধ্যে স্পেনের ৩০ জন, ইতালির ২২ জন, তুরস্কের ২১ জন এবং মালয়েশিয়ার ১২ জন রয়েছেন। এছাড়া সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও আটক হওয়া যাত্রীদের মধ্যে আছেন।
তিনি আরও বলেন, নৌযান আটক এবং যাত্রীদের গ্রেপ্তারের পরও এই মিশন থেমে নেই। বহরের অন্য ৩০টি নৌযান এখনো ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে গাজা অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে। অংশগ্রহণকারীরা গাজায় পৌঁছাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।
এই অভিযানে বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও গ্লোবাল এই মানবিক উদ্যোগে সরাসরি প্রতিনিধিত্ব তৈরি হয়েছে।
এদিকে গত বুধবার গভীর রাতে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, ফ্লোটিলার ইউলারা নামের একটি নৌযানের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী জলকামান ব্যবহার করেছে। এতে বহরের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার আয়োজকরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নিরস্ত্র মানবিক সহায়তা বহরে এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। তারা বিশ্বজুড়ে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে তাৎক্ষণিকভাবে আটক যাত্রীদের নিরাপত্তা ও মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামাস নিয়ন্ত্রিত নৌযানগুলোকে নিরাপদে থামানো হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের ইসরায়েলের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং তারা সবাই সুস্থ আছেন। তবে ইসরায়েল এই নৌবহরের হামাসের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকার কোনো প্রমাণ এখনো দেখাতে পারেনি।
প্রায় ৪০টির বেশি ছোট-বড় নৌযান নিয়ে গঠিত গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার এক আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা। এতে অংশ নিচ্ছেন ৪৪টি দেশের প্রায় ৫০০ মানুষ, যাদের মধ্যে রয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীরা। বহরের যাত্রা শুরু হয়েছিল গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে, পরে ইতালি, তিউনিসিয়া ও গ্রিস থেকে আরও নৌযান এতে যোগ দেয়। বর্তমানে নৌযানগুলো গাজার উপকূল থেকে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।