প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩
চলতি বছরের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নরওয়ের নোবেল কমিটি তার নাম ঘোষণা করে। পুরস্কার জয়ের পরপরই তিনি এই নোবেল উৎসর্গ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মারিয়া মাচাদো দীর্ঘদিন ধরে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর কট্টর বিরোধী হিসেবে পরিচিত। তিনি ইসরায়েল ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রকাশ্য সমর্থক। শনিবার (১১ অক্টোবর) জর্ডানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রোয়া নিউজের এক প্রতিবেদনে তার এসব বক্তব্য প্রকাশ পায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শান্তিতে নোবেল জয়ের পর এক ইসরায়েলি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাচাদো বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন এবং ঘোষণা দিচ্ছেন যে, ইসরায়েলের সমর্থনে ভেনেজুয়েলার দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হবে। এই বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়।
২০১৮ সালে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। তাতে তিনি মাদুরো সরকারকে উৎখাত করতে ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযান চালানোর আহ্বান জানান। এমনকি গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থানও নেন তিনি।
নোবেল জয়ের পর মাচাদো যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্প প্রশাসনের প্রশংসা করেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাচাদোর সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ভেনেজুয়েলার সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে তিনি সক্রিয় ছিলেন এবং এর জন্য আত্মগোপনেও যান।
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর মাদুরো সরকার মাচাদোকে গ্রেপ্তার করেছিল। তখন ট্রাম্প নিজেই সামাজিক মাধ্যমে তার মুক্তির দাবি জানান। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও তাকে "স্থিতিস্থাপকতা ও দেশপ্রেমের প্রতীক" বলে উল্লেখ করেন।
তবে মাচাদোর অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনাও আছে। ভেনেজুয়েলান বংশোদ্ভূত লেখক মিচেল এলনার ‘কোডপিংক’-এ লেখা এক কলামে বলেন, মাচাদোর মতো ডানপন্থিরা নোবেল জেতা মানেই শান্তির অবমূল্যায়ন। তিনি উল্লেখ করেন, মাচাদো ২০০২ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে অংশ নেন এবং সংবিধান বিলুপ্তির এক ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন।
মাচাদো প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে ভেনেজুয়েলায় তথাকথিত ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ গঠন করেছিলেন এবং নিজেকে সেই সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেন। বর্তমানে তিনি দেশের তেল, পানি ও অবকাঠামো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন, যা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।