প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৭
চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উত্তেজনা নতুন করে চরম আকার ধারণ করেছে। আগামী মাস থেকে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই আকস্মিক সিদ্ধান্তকে দুই দেশের মধ্যে নতুন বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, চীনের অন্যায্য বাণিজ্যনীতি এবং প্রযুক্তি খাতে তাদের আগ্রাসী অবস্থানের জবাবে যুক্তরাষ্ট্র আর নীরব থাকবে না। এ ঘোষণার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু সফটওয়্যার রপ্তানিতেও নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা জানান তিনি।
ট্রাম্পের অভিযোগ, বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে চীন বর্তমানে গোটা বিশ্বকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে। তার দাবি, এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য এক প্রকার ‘শত্রুতাপূর্ণ পদক্ষেপ’।
বিরল খনিজ পদার্থ গাড়ি, স্মার্টফোন ও অন্যান্য উচ্চপ্রযুক্তি পণ্যে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। চীনের এই খনিজ রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের পর থেকেই দুই পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু বাণিজ্য নয়, প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতাকেও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে। প্রযুক্তি ও গাড়ি খাতের শেয়ারমূল্যে হঠাৎ পতন দেখা যায়। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, যা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে, চীনের পক্ষ থেকেও পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে। এতে একটি বড় অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র-সম্পৃক্ত জাহাজ থেকে নতুন বন্দর ফি আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং সরকার।
এদিকে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের নির্ধারিত বৈঠক এখনো বাতিল হয়নি, তবে ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন যে বৈঠকটি আদৌ হবে কি না তা অনিশ্চিত। এ পরিস্থিতি দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও শীতল করে তুলেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গত মে মাস থেকে শুরু হওয়া সম্পর্কের অবনতি ও সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ওয়াশিংটন ও বেইজিং নতুন এক বাণিজ্যযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। এই সংঘাত যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিতেও এর বড় প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।