প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:২০
চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী রাজনীতিক ও গণতন্ত্র আন্দোলনের নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) নরওয়ের রাজধানী অসলোতে নোবেল কমিটি এই ঘোষণা দেয়। তার শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন ও নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
নোবেল কমিটির ঘোষণায় বলা হয়, মাচাদো ভেনেজুয়েলার জনগণকে গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি অহিংস উপায়ে দেশের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং জনগণের ভোটের অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করেছেন।
ভেনেজুয়েলায় দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকট চলমান। এমন পরিস্থিতিতে মাচাদোর নেতৃত্বে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। তার সাহসী ভূমিকা দেশটির জনগণের কাছে আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
নোবেল কমিটি জানায়, মাচাদোর নেতৃত্বে ভেনেজুয়েলার মানুষ গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস হারায়নি। তার আন্দোলন প্রমাণ করেছে যে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরিবর্তন সম্ভব, যদি জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকে। এই বার্তাই তাকে এ বছরের শান্তি পুরস্কারের যোগ্য করে তুলেছে।
এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মোট ৩৩৮টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ২৪৪ জন ব্যক্তি এবং ৯৪টি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন মনোনীত হয়। তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্য থেকে মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে বেছে নেয় কমিটি।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বছর শান্তি পুরস্কারের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তবে নোবেল কমিটি শেষ পর্যন্ত তার নাম বিবেচনা করেনি। আন্তর্জাতিক মহলে মাচাদোর নোবেল জয়কে ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে।
গত বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিল জাপানের সংগঠন নিহন হিদানকিও, যারা পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধে কাজ করে আসছে। এর আগে ২০১৪ সালে পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে শান্তি পুরস্কার পান মাত্র ১৭ বছর বয়সে।
১৯০১ সালে প্রথম নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান করা হয়। তখন থেকে এখন পর্যন্ত ৩১টি প্রতিষ্ঠান এবং শতাধিক ব্যক্তি এই সম্মান অর্জন করেছেন। এ বছরের পুরস্কার মাচাদোর জীবনে যেমন নতুন অধ্যায় যুক্ত করেছে, তেমনি ভেনেজুয়েলার ইতিহাসেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে থাকবে।