প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৫
রাশিয়ার পূর্ব উপকূলে কামচাটকা উপদ্বীপে ৮ দশমিক ৭ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে অঞ্চলজুড়ে তীব্র কম্পন অনুভূত হয় এবং আশপাশের একাধিক দেশে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে সাম্প্রতিক কয়েক দশকের মধ্যে এটিকে অন্যতম ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে মনে করছেন ভূতাত্ত্বিকরা।
বুধবার ৩০ জুলাই ভোররাতে এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল তুলনামূলকভাবে অগভীর এবং এটি পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাটস্কি শহর থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরে ছিল। কম্পনের পরই রাশিয়ার উপকূলবর্তী অঞ্চলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় গভর্নর ভ্লাদিমির সোলোদভ এক বিবৃতিতে বলেন, এই ভূমিকম্পটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র এবং ধ্বংসাত্মক। কামচাটকার একাধিক স্থানে ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট সুনামির ঢেউ ৩ থেকে ৪ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছে যায়। এতে উপকূলীয় কিছু এলাকায় ভৌত অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। রাশিয়ার পাশাপাশি জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঞ্চলেও সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপান কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু উপকূলীয় অঞ্চলে ৩ মিটার পর্যন্ত সুনামির পূর্বাভাস দিয়ে নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া সাখালিন গভর্নর সেভেরো-কুরিলস্ক শহরের জনগণকে সরাসরি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
কামচাটকা অঞ্চলটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় 'রিং অব ফায়ার'-এর অংশ হওয়ায় এখানে ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির মতো দুর্যোগ প্রায়শই ঘটে থাকে। এ কারণে অঞ্চলটি বরাবরই ভূতাত্ত্বিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগাম সতর্কতা এবং দ্রুত সাড়াপাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে বড় ধরনের প্রাণহানি থেকে এবার রক্ষা পেয়েছে এলাকাগুলো। তবে পরবর্তী আফটারশক ও সুনামির সম্ভাবনা এখনও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলো পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে।