প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৫১
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বর বোমাবর্ষণে একদিনে ৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি অপুষ্টি ও অনাহারের কারণে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা সংকটজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা পরিস্থিতির তীব্রতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অপুষ্টি ও খাদ্য সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থাগুলো জরুরি সাহায্য পৌঁছে দিতে সচেষ্ট হলেও অবরোধের কারণে ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা পড়ছে। গাজার মানুষের জীবন যেন নাজুক এক ভারসাম্যের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রধান ফিলিপ ল্যাজারিনি গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘মানুষগুলো যেন জীবিত মৃতের মতো, হাঁটতে থাকা লাশের মতো।’ তিনি আরও বলেন, তারা এমন একটি সংকটে রয়েছেন যেখানে বেঁচে থাকা এবং মরার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, চলতি বছরে গাজায় অপুষ্টিজনিত রোগে ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৬৩ জন মারা গেছে মাত্র এই মাসেই। নিহতদের মধ্যে ২৪ জন পাঁচ বছরের নিচের শিশু। শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হলেও খাদ্য সংকট ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হওয়ায় মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হয়নি।
গাজার অবরোধ ২০২৫ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু হয় এবং সীমিত মাত্রায় ত্রাণ ঢোকানো হচ্ছে। এ অবরোধের ফলে গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে গাজায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮২১ জনে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। যুদ্ধের তীব্রতা কমার কোন লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।
গাজার মানুষের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবিলম্বে মানবিক সাহায্য নিশ্চিত করতে হবে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা মনে করছে। পরিস্থিতি মানবিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অতিদ্রুত সমাধানের দাবি উঠছে।
গাজায় চলমান এই সংকটের কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমশ বিপজ্জনক আকার ধারণ করছে, যা দ্রুত হস্তক্ষেপের অপেক্ষায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা ছাড়া গাজার মানুষদের দুর্ভোগ কমানো অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।