প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১১:৫১
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরোধী সংঘর্ষে ইসরায়েল প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। ইসরায়েলি প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে তাদের অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দুই সপ্তাহব্যাপী সংঘর্ষের সময় ইসরায়েলের সামরিক এবং বেসামরিক খাতে বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ হয়।
১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা এবং আবাসিক এলাকায় আক্রমণ চালায়। এক ধরনের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এয়ারোস্পেস ফোর্স ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’র আওতায় ২২ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে অধিকৃত ফিলিস্তিনের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বড় ফাঁক দেখা দেয় এবং তাদের অর্থনৈতিক অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে, সামরিক সরঞ্জাম ও অবকাঠামোর উপর ধ্বংসাত্মক আঘাতের কারণে ইসরায়েলের আর্থিক ক্ষতি তিন বিলিয়ন ডলারের আশেপাশে।
আগেই ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা—নাতানজ, ফোরদো ও ইসফাহানে বিমান হামলা চালায়। এর ফলে ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। এই হামলা যুদ্ধের জটিলতা বাড়ায় এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
২৪ জুন একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এই সংঘর্ষের অবসান ঘটে। তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা এ সংঘাতের রেশ ছড়িয়ে দিতে পারে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এই সংঘর্ষ ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সংঘর্ষের সূত্রপাত হতে পারে বলে সতর্কতা জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে সম্পূর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। অন্যথায় এই ধরনের সংঘাত ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আকার ধারণ করতে পারে।
অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকরাও এই সংঘর্ষের মধ্যে ব্যাপক বিপদে পড়েছেন। সামরিক হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণে নিরাপদ আশ্রয়হীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, যা মানবিক সংকটের নতুন মাত্রা যোগ করছে।
পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত সংকটপূর্ণ এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উচিত শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করা। বিশ্ব সম্প্রদায়ও এই উত্তেজনা কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
সূত্র : মেহের নিউজ এজেন্সি