প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ২২:২৫
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পর গোটা মধ্যপ্রাচ্যে যে প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে, তারই অংশ হিসেবে কাতার সোমবার নিজেদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ কাতারের উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হলেও বাস্তবে তা আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর থেকে অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে কাতার সরকার জানিয়েছে, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বর্তমান নিরাপত্তা হুমকি এবং আশেপাশের পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের আকাশসীমায় সমস্ত ধরনের বেসামরিক বিমান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত শুধু কাতারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নয়, বরং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতিও দেশটির দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এর আগে কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দূতাবাস এক যৌথ বিবৃতিতে তাদের নাগরিকদের ঘরের ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে নাগরিকদের বাইরে না যাওয়া এবং পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে কাতারের বেশ কিছু স্কুল আগামীকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস স্থগিত থাকবে।
আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে এমন এক সময়ে এই সিদ্ধান্ত এল যখন ইরান একের পর এক পাল্টা হুমকি দিচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছে।
কাতারের এই পদক্ষেপকে শুধু প্রতিরক্ষা নয়, বরং কূটনৈতিকভাবে একটি সতর্ক বার্তা হিসেবেও বিবেচনা করছেন অনেকে। এটি ইঙ্গিত দেয়, উপসাগরীয় দেশগুলো নতুন করে সংঘাতে না জড়িয়ে বরং নিরাপত্তা নিশ্চিতের পথেই হাঁটতে চায়।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা কেবল দ্বিপাক্ষিক দ্বন্দ্বে সীমাবদ্ধ নেই বরং এর প্রভাব গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে, যার পরিণতি দীর্ঘমেয়াদী অনিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি করতে পারে।