প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ২২:৩৩
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি ঘনীভূত হয়েছে এবং তার প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে। নিরাপত্তা বিবেচনায় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স তাদের দুবাইগামী একাধিক ফ্লাইট বাতিল করেছে। পাশাপাশি অন্তত ১৫০টি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা ইরান, ইরাক ও জর্ডানের আকাশসীমা ব্যবহার থেকে বিরত থেকেছে, যা বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে এই হামলা সংঘটিত হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই ইসরায়েল তেহরানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিশোধ ও পাল্টা হামলার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য এটি একটি জটিল সময়, কারণ তারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইতিমধ্যে রুশ আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে। এখন মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতি আরও কঠিন করেছে। শনিবার রাতে লন্ডন থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ফ্লাইট মাঝপথে জুরিখে অবতরণ করে, যার ফলে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। একইসঙ্গে দোহা ও বাহরাইন রুটের একাধিক ফ্লাইটও স্থগিত করা হয়েছে।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য ফ্লাইট সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। অপরদিকে, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সও একই যুক্তিতে তাদের দুবাই রুটের ফ্লাইট বাতিল করেছে। ফ্লাইটরাডার টুয়েন্টিফোর-এর তথ্যমতে, প্রতিদিন প্রায় তিন হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে এবং ইরান, ইরাক, সিরিয়ার আকাশ ফাঁকা থাকছে। ফলে বিমানগুলো বিকল্প পথ হিসেবে সৌদি আরব ও মিশরের আকাশসীমা ব্যবহার করছে, যা সময় ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে।
রবিবার সকালে সাময়িকভাবে ইসরায়েলের আকাশসীমাও বন্ধ করে দেওয়া হয়, পরে দুপুরের দিকে তা খুলে দেওয়া হলেও আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি। আর্কিয়া এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, তারা বিদেশে আটকে পড়া যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে রেসকিউ ফ্লাইট চালু করবে। এই পরিস্থিতিতে ফ্লাইট নিরাপত্তা ও স্থিতিশীল আকাশসীমা ব্যবস্থাপনার প্রশ্নটি আবারও আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনায় এসেছে। পরিস্থিতির উন্নয়ন না ঘটলে বিশ্বব্যাপী যাত্রী পরিবহন ও বাণিজ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে।