প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ১১:৩৮
ইসরাইলি বাহিনী আবারও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নৃশংস হামলা চালিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯২ জন ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই ছিলেন মানবিক সহায়তার আশায় অপেক্ষমাণ সাধারণ মানুষ। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে স্থানীয় চিকিৎসকরা। এই হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের আশপাশে জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত জনগণ।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে ড্রোন, ট্যাংক ও মেশিনগানের সহায়তায় হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের ওপর হঠাৎ চালানো হয় নির্বিচার গুলিবর্ষণ। ঘটনাস্থলেই অনেকের মৃত্যু হয় এবং বহু মানুষ রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে থাকেন।
স্থানীয় একটি মার্কিন ও ইসরাইলি সমর্থিত সংস্থার ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে নিহতদের স্বজনরা আহাজারি করতে থাকেন। নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু ছিল, যারা যুদ্ধের কারণে বাস্তুহারা হয়ে পড়েছিল এবং সাহায্যের আশায় এখানে এসেছিল।
ডাক্তার ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। প্রতিদিন নতুন করে হতাহত মানুষ হাসপাতালে আসছেন, কিন্তু সরঞ্জাম ও ওষুধের সংকটে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে শুধু গাজাই নয়, দখলকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরাইলি সেনারা কঠোর দমন-পীড়ন শুরু করেছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, মধ্যরাতের অভিযান এবং গণগ্রেফতারের কারণে ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। পশ্চিম তীর এখন কার্যত সেনা নিয়ন্ত্রিত এক অঘোষিত কারাগারে পরিণত হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, আন্তর্জাতিক দৃষ্টি ইরানের দিকেই বেশি থাকায় ফিলিস্তিনে ইসরাইল তাদের সহিংস তৎপরতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিরবতা এই নিষ্ঠুরতা চালিয়ে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে। এই পরিস্থিতিতে গাজার মানুষ চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি।