প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৫, ১১:৫
মধ্যপ্রাচ্যে আবারও উত্তেজনার পারদ চড়ে গেছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায়। শনিবার রাতে ইরানের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিব শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত আটজন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছে। ইসরায়েলি পুলিশের মতে, হামলার শিকারদের মধ্যে দুইজন চল্লিশোর্ধ্ব নারী, একজন ২০ বছর বয়সি তরুণী এবং এক ১৩ বছর বয়সি কিশোরী রয়েছেন।
বাত ইয়াম শহরে একটি আবাসিক ভবনে মিসাইল আঘাতের পর অন্তত ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে হিব্রু গণমাধ্যম। ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব হামলার পর মধ্য ইসরায়েলে আরও দুই শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যা পরিস্থিতির আরও অবনতির ইঙ্গিত দেয়।
অন্যদিকে, ইসরায়েলও চুপ থাকেনি। তারা ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালিয়েছে। সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর, শাহরান তেল স্থাপনা, ও দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রকে। এসব হামলায় ইরানের জ্বালানি খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণের পর সেখানেও আগুন ধরে যায়।
ইরান বলছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৮০ জন নিহত এবং ৮০০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু। এই পরিস্থিতিতে ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে, যা বিশ্বের জ্বালানি বাজারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। প্রণালিটি বন্ধ হলে তেলের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উভয়ে সম্মত হয়েছেন যে, ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ বন্ধ হওয়া জরুরি। তাঁদের মতে, এই সংঘাত আরও বিস্তৃত যুদ্ধের জন্ম দিতে পারে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ।
আঞ্চলিক এই সংকট বর্তমানে একটি সম্ভাব্য বিশ্বব্যাপী সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। শক্তির কৌশলগত হিসাব-নিকাশ, রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এবং প্রতিশোধের রাজনীতির ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য। এই পরিস্থিতির সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলের সক্রিয় হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।