প্রকাশ: ৩ জুন ২০২৫, ১১:১৮
পাকিস্তানের করাচিতে একটি অভূতপূর্ব নিরাপত্তা বিভ্রাটে জেলের ভেতর থেকে পালিয়ে গেছে দুই শতাধিক কয়েদি। সোমবার ভূমিকম্পের সময় এই ঘটনাটি ঘটে, যা দেশজুড়ে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
জেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমিকম্পের সময় কয়েদিদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য ব্যারাক থেকে সাময়িকভাবে বাইরে আনা হয়েছিল। তখন প্রায় ৬০০ বন্দি বাইরে অবস্থান করছিল। এই অবস্থাতেই হঠাৎ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং বন্দিরা একযোগে জেলের গেট ভাঙার চেষ্টা শুরু করে।
জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুযোগে মোট ২১৬ জন বন্দি পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান শুরু করে এবং এখন পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি পালানো বন্দিকে পুনরায় আটক করা সম্ভব হয়েছে।
সিন্ধ প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়া-উল-হাসান লাঞ্জার বলেন, এটি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় জেল ভাঙার ঘটনা। তিনি জানান, প্রায় ৭০০ থেকে ১,০০০ বন্দি জেলের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়েছিল, যাদের মধ্যে অন্তত ১০০ বন্দি ফটক ভেঙে বাইরে বেরিয়ে যায়।
পালিয়ে যাওয়া কয়েদিদের শনাক্ত করে তাদের বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই ঘটনায় যদি কোনো জেল কর্মী বা নিরাপত্তা সদস্যের অবহেলা প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিন্ধ পুলিশের মহাপরিদর্শক গুলাম নবি মেমন বলেন, জেলটিতে অনেকে মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধে এবং মানসিকভাবে অস্থির অবস্থায় বন্দি ছিলেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অধিকাংশ পালিয়ে যাওয়া কয়েদিকে খুব দ্রুত ফেরত আনা সম্ভব হবে।
ঘটনার সময় আহত হয়েছেন তিনজন ফ্রন্টিয়ার কর্পস সদস্য, একজন জেল স্টাফ এবং এক কয়েদি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ, রেঞ্জার্স, ফ্রন্টিয়ার কর্পস, এসএসইউ এবং র্যাপিড রেসপন্স ফোর্স যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
জেল সূত্র জানায়, ঘটনার সময় কারাগারে মোট ৬,০২২ জন বন্দি ছিল এবং পলাতক কয়েদিদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করা হবে।
পুনরায় আটক এক কয়েদি সিরাজ বলেন, “ভূমিকম্পে সবাই ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ করে লোকজন গেটের দিকে দৌড়াতে শুরু করে, আমিও পালিয়েছিলাম। এখন আবার ধরা পড়েছি।”
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনো ১৩৫ জনের বেশি কয়েদি পলাতক। পুরো পরিস্থিতি ঘিরে করাচির নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং কারাগার ব্যবস্থাপনার ওপর বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।