প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১৯:৪৪
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের দ্রুত একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে এক সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই নির্বাচন হওয়া উচিত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে বিভিন্ন মতামত থাকলেও তিনি ভারত থেকে কোনও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকারের ওপরেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও শাসনব্যবস্থার দায়িত্ব বর্তায়। যদি বাইরের কোনো শক্তিকে দোষারোপ করা হয়, তবে তা প্রকৃত সমস্যাগুলো থেকে দৃষ্টি সরে যাওয়ার প্রচেষ্টা মাত্র।’’ তিনি আরও বলেন, সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার পরিবর্তে অন্যদের ওপর দায় চাপানোর প্রবণতা সমাধানের পথে বাধা সৃষ্টি করে।
এই মন্তব্য আসে তখন যখন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কিছু দিন আগে ভারতের বিরুদ্ধে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অভিযোগ করা হয়েছিল। তবে রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্ট করে দেন, বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতার জন্য বাইরের কোনো শক্তি দায়ী নয়। তিনি এও বলেন, ‘‘আসল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানে মনোনিবেশ করাই সবচেয়ে জরুরি।’’
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর জানান, প্রধান উপদেষ্টা ভারতের আধিপত্যবাদের কারণে বাংলাদেশ সংকটে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ আমাদের পরিবর্তনকে মানতে চায় না এবং দেশের অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।’’
তবে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই অভিযোগগুলো প্রকৃত সমস্যা থেকে নজর সরানোর চেষ্টা মাত্র। রণধীর জয়সওয়াল সরকার ও জনগণের মধ্যে সংলাপ ও সহমতের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নতি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত নির্বাচন করাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তিনি আরও বলেন, ‘‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন জনগণের ম্যান্ডেট নিশ্চিত করবে এবং দেশের উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।’’
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বিভিন্ন ইস্যু থাকলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় সমাধানে সক্রিয় সহযোগিতা ও সঠিক সংলাপই ভবিষ্যতে স্থায়ী শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ সুগম করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
পাশাপাশি, বাংলাদেশের জনগণ দ্রুত একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যত নির্মাণে অংশ নিতে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী ও সমন্বিত হওয়া বিশেষ প্রয়োজন। রাজনীতির অস্থিরতা কাটিয়ে উঠে উন্নয়নের দিকেই মনোনিবেশ করা জরুরি বলে মন্তব্য করছেন অনেকে।
সাম্প্রতিক এই প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট হয়েছে যে, বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে অবাধ নির্বাচন জরুরি এবং এজন্য সকল পক্ষকে মিলে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।