প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ২১:৩০
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
মৌলভীবাজার জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশের শিখন ঘাটতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় গত ২ জুলাই থেকে ১৫ দিনের এক বিশেষ কার্যক্রমে বেইজলাইন টুলসের মাধ্যমে এই মূল্যায়ন করা হয়, যেখানে জেলার সাতটি উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের
বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে তাদের বর্তমান শিক্ষাগত মান যাচাই করা হয়। লিখিত প্রশ্ন, মৌখিক প্রশ্ন এবং রিডিং পড়ানোর মাধ্যমে একজন একজন শিক্ষার্থীর শিখন মান নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এ কার্যক্রম তদারকি করেছেন জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। শ্রীমঙ্গল উপজেলার যুগেন্দ্র মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা বেগম জানান, তার বিদ্যালয়ে ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর দুর্বলতা
পাওয়া গেছে এবং পরিদর্শনের সময় মূল্যায়ন সঠিকভাবে পরিচালিত হয়েছে। চিমাইলত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক লাভলী রানী দে বলেন, প্রায় ৩০ ভাগ শিক্ষার্থী সঠিকভাবে পড়তে বা লিখতে পারেনা, উচ্চারণ করতে সমস্যা হয়, যা নির্ধারিত ফরমে রেকর্ড করা হয়েছে। শিক্ষক লিপিমনি গোয়ালা জানান, বেইজলাইন টুলসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত শিখন অবস্থা যাচাই করা সম্ভব হয়েছে এবং এই তথ্য ভবিষ্যতের উন্নয়ন পরিকল্পনায় সহায়ক হবে। শিক্ষক ঝুমু রানী সরকার জানান, আগে ভালো বা দুর্বল শিক্ষার্থীদের নিয়ে
কিছুটা ধারণা থাকলেও এত বিস্তৃতভাবে পরীক্ষা করা হয়নি, এখন সুনির্দিষ্টভাবে কার কিসে ঘাটতি তা লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে। শ্রীমঙ্গল ভাড়াউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্যাণ দেব জানান, ১৫ দিনব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং মূল্যায়ন অনুযায়ী আগামীতে শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে কাজ করা হবে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন,
৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়তে ও লিখতে সক্ষম হলেও বাকি ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের মধ্যে ঘাটতি রয়েছে, যা আগামী চার মাসের মধ্যে প্রশিক্ষণ ও পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে কাটিয়ে তোলা হবে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বলেন, জেলার সব স্কুলেই এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে এবং শিখন ঘাটতি নিরসনে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা, অভিভাবকদের সহযোগিতা এবং সরকারের নীতিগত উদ্যোগে আগামী চার মাসেই শিক্ষার্থীদের ঘাটতি অনেকাংশে কাটিয়ে তোলা সম্ভব হবে। এই কার্যক্রমকে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বাস্তবমুখী ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন।