প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১৭:৫৫
ভারতের একটি শীর্ষ প্রতিরক্ষা কোম্পানির সঙ্গে ২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের চুক্তি বাতিল করে কৌশলগত বার্তা দিল বাংলাদেশ। শুক্রবার ভারতের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো এ সিদ্ধান্তের খবর প্রকাশ করে, যা দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত বহন করছে।
চুক্তি অনুযায়ী, কলকাতা-ভিত্তিক গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই) বাংলাদেশের নৌবাহিনীর জন্য ৮০০ টন ওজনের একটি টাগ বোট নির্মাণ করত। তবে ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য পরিবহনে হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা জারির পরই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর ভূ-কৌশলগত অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করেন এবং বাংলাদেশকে সাগরপথে গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসেবে উল্লেখ করেন। এরপরই ভারত তাদের সীমান্তে বাংলাদেশি পণ্য চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায়, জিআরএসই নামক কোম্পানিটি দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এবং ভারতীয় নৌ ও কোস্টগার্ডের জাহাজ নির্মাণে পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর কোম্পানিটি নিশ্চিত করেছে, চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।
এই টাগ বোট কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালে, যখন বাংলাদেশ-ভারত মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা ঋণচুক্তি হয়। সেই চুক্তির অধীনেই এটি ছিল প্রথম বড় প্রকল্প। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে এই সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।
চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ তার কৌশলগত অবস্থান কাজে লাগিয়ে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্ত শুধু প্রতিরক্ষা নয়, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক বার্তাও বহন করে। এটা ভারতের প্রতি একটি শক্ত প্রতিক্রিয়া যা ভবিষ্যতের সম্পর্ক পুনর্গঠনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের নীতি ও কৌশলে এই পরিবর্তন এখন গোটা অঞ্চলে নতুন আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারসাম্য রক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকাই ভবিষ্যতে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।