প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৩
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামাস উৎখাত এবং জিম্মি উদ্ধারের নামে ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই সেখানে হামলার মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে, আর লাশের মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে। গাজার বাসিন্দাদের জন্য আর কোনো স্থানই নিরাপদ থাকছে না। একদিকে লাগাতার আকাশ ও স্থল অভিযান, অন্যদিকে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে গাজাকে পরিণত করা হয়েছে এক নরকপুরীতে।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৭১ ফিলিস্তিনি। প্যালেস্টাইন ক্রনিকলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে গাজায় এ পর্যন্ত ৫২ হাজার ৩১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যকই নারী ও শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৯২ জন মানুষ। ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনের ভয়াবহতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে আহত ও নিহতের এই বিপুল সংখ্যা। প্রতিদিনই নতুন করে যোগ হচ্ছে মৃত ও আহত মানুষের তালিকা।
এদিকে, তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, সোমবার গাজার বিভিন্ন অংশে ড্রোন ও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ওয়াফা নিউজের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, এসব হামলায় নারী ও শিশুসহ আরও ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সোমবার সকালে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরে প্রথম হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে খান ইউনিসের নিকটবর্তী আল শরিফ শরণার্থী শিবিরেও হামলা চালানো হয়, যেখানে আরও ৪ জন প্রাণ হারান। গাজার প্রধান শহর গাজা সিটিতেও প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন বাসিন্দা।
উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবির এবং বেইত লাহা উপশহরে পৃথক হামলায় নিহত হয়েছেন আরও ১৯ জন। এই হামলাগুলো গাজাবাসীদের জন্য দিনকে দিন জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে। প্রতিটি এলাকা যেন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত জানুয়ারিতে স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও মার্চের মাঝামাঝি থেকে নতুন করে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সাম্প্রতিক হামলায় ইতোমধ্যেই ২ হাজার ২২৪ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫ হাজার ৭৫১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।