দিনাজপুরের পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী রেলপথের হলদীবাড়ী এলাকায় ট্রেনে কাটা অবস্থায় ভরত চন্দ্র রায় নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করা হয়, তার দুই হাত প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। নিহত ভরত চন্দ্র রায় চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এবং পার্বতীপুর রেলওয়েতে খালাসি পদে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা, তাকে হত্যার পর হাত বেঁধে রেললাইনে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে ট্রেনে কাটা পড়ে তার মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। খবর পেয়ে দিনাজপুর সিআইডির এএসপি ফারুক আহম্মেদ, এএসপি সার্কেল জিন্নাহ আল মামুন, ডিবির ওসি সোহেল রানা, রেলওয়ে থানার ওসি ফকরুল ইসলাম ও মডেল থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং তদন্ত শুরু করেছেন।
নিহতের ছেলে রিপন চন্দ্র জানান, তার বাবা প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফিরতেন, কিন্তু সোমবার রাত ৭টার পর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং তার মরদেহ শনাক্ত করেন। পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
রিপন আরও জানান, তার বাবার দেড় লাখ টাকা বকেয়া বেতন পাওয়ার কথা ছিল এবং সেই টাকা দিয়ে চাচাতো বোনের বিয়ের জন্য মোটরসাইকেল কেনার পরিকল্পনা ছিল। সোমবার অফিসে যাওয়ার পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নিহতের স্ত্রী ভারতী বানী বলেন, আমার স্বামীর কোনো শত্রু ছিল বলে জানি না, কিন্তু তাকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো বুঝতে পারছি না। কয়েক দিনের মধ্যেই পরিবারের একটি বিয়ে ছিল, এখন সব এলোমেলো হয়ে গেল।
রেলওয়ে থানার ওসি ফকরুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এলাকাবাসী ও স্বজনরা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দ্রুতই জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, এটি কোনো পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। তবে প্রকৃত ঘটনা জানতে তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।