সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনীর অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৪:১২ অপরাহ্ন
সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনীর অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’

গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যৌথ বাহিনীর এই অভিযানকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে পরিচালনা করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।  


সভায় জানানো হয়, শনিবার থেকেই গাজীপুরসহ দেশের অন্যান্য স্থানে এই অভিযান শুরু হবে। এতে র‍্যাব, পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা অংশ নেবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে হবে এবং কেউ যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।  


স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার এই অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে প্রেস ব্রিফিং করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।  


এদিকে, গাজীপুরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ জনগণের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।  


অপরদিকে, বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে অভিযানের অপব্যবহার করতে পারে। তবে সরকার বলছে, এই অভিযান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনের জন্য পরিচালিত হবে এবং নিরীহ কেউ হয়রানির শিকার হবে না।  


বিশ্লেষকদের মতে, গাজীপুরের সাম্প্রতিক সহিংসতা রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থান নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে, তবে এটি বিরোধী দলগুলোর নতুন প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে।  


সাধারণ নাগরিকরা নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, এই অভিযান সহিংসতা দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, আবার কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে। সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।