নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে বিশেষ শর্ত যুক্ত করা। গত শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, নওগাঁ সদর হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ব্যানারে এক মানবববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়, যেখানে তত্ত্বাবধায়কের অপসারণ দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে নওগাঁ ড্রাগ এন্ড কেমিস্ট সমিতির সহ-সভাপতি মাসুদ হায়দার, ছাত্র প্রতিনিধি রিয়াদুল সালেহীন, ও হাসপাতালের তালিকাভুক্ত এমএসআর সামগ্রী সরবরাহকারী ঠিকাদার আশরাফুল ইসলামসহ স্থানীয় বাসিন্দারা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অভিযোগ করেন যে, ৫ জানুয়ারি নওগাঁ সদর হাসপাতালে ওষুধ ও সার্জিক্যাল সামগ্রী কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই দরপত্রে তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে বেশ কয়েকটি অযৌক্তিক শর্ত যুক্ত করেছেন।
বক্তারা আরো বলেন, দরপত্রে এমন একটি শর্ত ছিল যেখানে ঠিকাদারদের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর নমুনা জমা দিতে হবে। এর ফলে অনেক ঠিকাদার দরপত্রে অংশ নিতে পারেননি, কারণ এই শর্ত কোনো হাসপাতালেই কার্যকর নয়। এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়কের অপসারণসহ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
হাসপাতালের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, দরপত্র আহ্বান এবং অন্যান্য কার্যক্রম সবই নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়কের দাবি, হাসপাতালের স্বার্থে দরপত্রে যৌক্তিক শর্ত যুক্ত করা হয়েছে, এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বাছাই করবে।
নওগাঁ ড্রাগ এন্ড কেমিস্ট সমিতির সভাপতি মাসুদ হায়দার টিপু বলেন, যে শর্তগুলো যোগ করা হয়েছে তা নিয়মবহির্ভূত এবং অযৌক্তিক। তিনি দাবি করেন, এসব শর্ত সংশোধন করে আবার নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা উচিত।
তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী, প্রধান সহকারী স ম ওমর ফারুক এবং স্টোর কিপার সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে রোগীদের খাবার সরবরাহ এবং হাসপাতালের ওষুধ বিক্রির মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। এসব অভিযোগের তদন্তের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
এই মানববন্ধনের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ এবং ঠিকাদাররা আশা প্রকাশ করেছেন যে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, অভিযোগের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের প্রধান অফিস সহকারী স ম ওমর ফারুক এ বিষয়ে বলেন, "যদি কেউ অভিযোগ করে থাকে, তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব সময় নিয়ম অনুযায়ী কাজ করে থাকে।"
অভিযোগের বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে এবং ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের প্রতি জনগণের নজর এখনো থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।