ইসরায়েলে হুতিদের লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, জনমনে আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ১৮ই জানুয়ারী ২০২৫ ০৮:২২ অপরাহ্ন
ইসরায়েলে হুতিদের লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, জনমনে আতঙ্ক

ইহুদিবাদী ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে আবারও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইয়েমেনের হুতি যোদ্ধারা। শনিবারের এই হামলার পর তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সাইরেন বেজে ওঠে। টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে হুতিদের এটি চতুর্থ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। এই ঘটনার পর তেল আবিবের বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।  


ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। আকাশেই ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হলেও সতর্কতার অংশ হিসেবে সাইরেন বাজানো হয়। ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, হামলার ফলে অধিকৃত কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে কয়েকজন আহত হয়েছেন।  


হুতির এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে জনজীবনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাইরেনের শব্দ শুনে হাজারো মানুষ বোমা শেল্টারের দিকে ছুটছে। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।  


ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম বলছে, হুতিদের পক্ষ থেকে একাধিকবার হামলা চালানোর ফলে তেল আবিবসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কোনো হতাহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।  


ইয়েমেনের হুতিরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে শুক্রবার তারা দাবি করে, মধ্য ও দক্ষিণ ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। একই সঙ্গে লোহিত সাগরে একটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরিতে আঘাত হানার কথাও জানায় তারা।  


ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, হুতিদের ক্রমাগত হামলা ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এ ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধে নতুন কৌশল গ্রহণের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে প্রতিরক্ষা বাহিনীর মতে, ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত সফলভাবে আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।  


ইসরায়েল-হুতি সংঘাত নতুন মাত্রা পাচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আক্রমণের ধারাবাহিকতা ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় আরও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  


পরিস্থিতি জটিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলও এই ইস্যুতে গভীর নজর রাখছে। বিশেষ করে হুতিদের লোহিত সাগরে মার্কিন রণতরিতে আঘাতের দাবি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন আলোচনা তৈরি করেছে।