পুলিশকে উলঙ্গ করে জেলে ঢোকানোর হুমকি নেতার !

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩১শে মার্চ ২০২২ ০৬:২৮ অপরাহ্ন
পুলিশকে উলঙ্গ করে জেলে ঢোকানোর হুমকি নেতার !

পুলিশ আধিকারিককে হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়ার এক বিজেপি নেতা। বাঁকুড়ার ছাতনা থানার আইসি আশিস জৈনকে উলঙ্গ করিয়ে জেলের ভাত খাওয়ানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-র বাঁকুড়া জেলার প্রাক্তন সহ-সভাপতি জীবন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পরে বিজেপি-র বাঁকুড়া জেলার নেতাদের অবশ্য দাবি, জীবন দলের কোনও পদে নেই। ছাতনা থানার পুলিশ সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, বেআইনি জমায়েতের অভিযোগে জীবন-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। জীবনের এই হুমকির জেরে অস্বস্তিতে বিজেপি। যদিও বাঁকুড়ার বিজেপি-র দাবি, তিনি দলের কোনও পদে নেই।


বৃহস্পতিবার ছাতনার দুবরাজপুর মোড়ে একটি পথ অবরোধ কর্মসূচিতে যোগ দেন জীবন। সেখানে ‘বেআইনি’ জমায়েত সরাতে যাওয়া আইসি-র সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। আইসি-র উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনি তৃণমূলের হয়ে দালালি করতে এসেছেন। আমরা বিকেল চারটেয় বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করব। আমরা দেখতে চাই, আপনি মায়ের কত দুধ খেয়েছেন। আপনার বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ জানাব। আপনাকে জেলের ভাত খাওয়াব। এই আইসি-কে পোশাক খুলে উলঙ্গ করব।’’


বাঁকুড়ার ছাতনার বাঁকাপাড়া নামে একটি পুকুরে সম্প্রতি সংস্কারের কাজ হয়েছে। সূত্রের খবর ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পে প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। ওই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকালে থেকে দুবরাজপুর মোড়ে বাঁকুড়া-পুরুলিয়া রাস্তা জীবনের নেতৃত্বে অবরোধ করে স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের একাংশ। কিছু ক্ষণ ধরে অবরোধ চলার পর ছাতনা থানার আইসি-র নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশ অবরোধকারীদের তুলতে গেলে ধস্তাধস্তি বাধে। এই সময় জীবন চক্রবর্তী হাতে মাইক নিয়ে আইসিকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বিজেপি-র তরফে কোনও পথ অবরোধ কর্মসূচিও ছিল না বলেও দাবি করা হয়েছে।


তবে গোটা ঘটনা নিয়ে জীবনের বক্তব্য, ‘‘আমি হুমকি দিইনি। অন্য ভাবে এর ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকতে পারে। আইসি গণতন্ত্রকে উলঙ্গ করে দিয়েছেন। আমাদের অবরোধকে সকলেই সমর্থন করছিল। আইসি নিজস্ব উদ্যোগে অবরোধ তুলে দিয়েছেন। ছাতনার আইসি পুলিশ-প্রশাসনের লজ্জা। আমি আমার বক্তব্যে সে কথাই বলতে চেয়েছি।’’


জীবনের বক্তব্যের সমালোচনা করে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা মাধব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘ওই আইসি কারও বাবা, কারও কাকা, কারও দাদা। তাঁর সম্পর্কে এ ধরনের কুরুচিকর মন্তব্য শোভনীয় নয়। এই ধরনের মন্তব্য করা বিজেপি-র সংস্কৃতি।’’


বিজেপি জীবনকে তাদের দলের পদাধিকারী হিসাবে মানতে চায়নি। গেরুয়া শিবিরের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য অশোক বিদের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-র পতাকা কলকাতার বড়বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তা নিয়ে যে কেউ কোনও কর্মসূচি করে থাকতে পারেন। পথ অবরোধ কর্মসূচির সঙ্গে বিজেপি-র কোনও সম্পর্ক নেই। যাঁরা এই অবরোধ করেছিলেন, তাঁরা কেউই বিজেপি-র পদাধিকারী নয়। বিজেপি এই ধরনের বক্তব্যকে সমর্থন করে না।’’