বাংলাদেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত সেই নারীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশেষ প্রতিবেদক - স্বাস্থ্য বিভাগ
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১৬ই জানুয়ারী ২০২৫ ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত সেই নারীর মৃত্যু

দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) আক্রান্ত হয়ে সানজিদা আক্তার নামে ৩০ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরিফুল বাশার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  


১২ জানুয়ারি তার এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জানা যায়। ওই নারীর বিদেশ ভ্রমণের কোনো ইতিহাস ছিল না। তিনি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকার বাসিন্দা। একই সঙ্গে তিনি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়ায়ও আক্রান্ত ছিলেন বলে জানান রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) এক কর্মকর্তা।  


আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন জানান, এইচএমপিভি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। প্রতিবছরই দেশে কয়েকজন রোগী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এটি শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও পাওয়া যায়। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আগে থেকেই ছিল। তাই এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।  


তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভাইরাসের নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি বা প্রতিরোধমূলক ভ্যাকসিন নেই। আক্রান্তদের উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। তাই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব রোধে জনসচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।  


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা (সিডিসি) জানিয়েছে, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষত ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। হাঁপানি, ক্রনিক পালমোনারি ডিজিজ বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ব্যক্তিরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।  


১২ জানুয়ারি সিডিসির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এইচএমপিভির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সীমান্ত এলাকায় বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে জনগণকে হাঁচি-কাশির সময় মাস্ক ব্যবহার, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।  


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা থেকে এই ভাইরাস গুরুতর শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে। গর্ভবতী নারী, শিশু এবং বয়স্করা ভাইরাসটির প্রভাবে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে সবাইকে সচেতন থাকার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।  


স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করছে, এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্ক না ছড়িয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া হলে ভাইরাসটির প্রভাব নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।