ঢাকাই চলচ্চিত্রের নন্দিত নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা ভালোবাসায় আর অশ্রুজলে শেষ বিদায় জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন স্তরের মানুষ তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানায়। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌস, নিপুণ, জায়েদ খানসহ ঢাকাই সিনেমার নবীন প্রবীণ বহু মুখ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ শ্রদ্ধা জানান। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে কমোডর এমএম নাঈম রহমান তার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিত্রনায়ক ফারুক আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে গেছেন। আদর্শের প্রশ্নে তিনি ছিলেন অবিচল, অনড় ও আপসহীন। আদর্শের প্রশ্নে তিনি সংকটেও দিশেহারা হননি।
নায়ক ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ বলেন, ‘আমার বাবা চলে গেলেন। আপনারা আমার বাবার প্রতি কোনো দাবি রাখবেন না। তার জন্য দোয়া রাখবেন। সারাজীবন বাবা মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। মৃত্যুর পরও আপনারা সেই ভালোবাসা দিয়ে যাবেন। তার আত্মার জন্য দোয়া রাখবেন।"
জাসদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রয়াত এই অভিনয়শিল্পী ও সংসদ সদস্যের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে মৃত্যু হয় ফারুকের। রক্তে সংক্রমণজনিত জটিলতা নিয়ে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
আজ সকালে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে ঢাকা পৌঁছায় ফারুকের কফিন। সেখানে থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরার বাসায়।
দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষে বেলা পৌনে ১টার দিকে ফারুকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে। সেখনে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান এক সময়ের সহকর্মী শিল্পী, কলা-কুশলীরা।
বেলা সাড়ে ৩টায় এফডিসিতে জানাজার পর ফারুকের মরদেহ নেয়া হয় চ্যানেল আইয়ের কার্যালয়ে। বিকাল ৫টায় গুলশান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আরেক দফা জানাজা হয়।
পরে ফারুকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরের কালীগঞ্জের তুমুলিয়া দক্ষিণ সোম গ্রামে। সেখানে সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে দাফন করা হবে চিত্রনায়ক ফরুককে।
সূত্র: বাসস
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।