চিত্রনায়িকা মৌসুমী সম্প্রতি গণমাধ্যমে মৃত্যুর আগে জীবনের কিছু শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, আমি যদি মরে যাই, আমার সব ভুলের জন্য ক্ষমা চাই সবার কাছে। ক্ষমা করে দেবেন আমাকে। আমার কয়েকটি ইচ্ছা আছে।
তিনি বলেছিলেন, আমি মারা যাওয়ার পর আমার লাশ যেন কাউকে দেখতে দেওয়া না হয়। অবশ্যই খুব গোপনে যেন কবর দেওয়া হয়। জানাজা হবে, কিন্তু আমি চাই না কেউ আমাকে আর দেখুক। আর মারা যাওয়ার আগে বড় হজ করার ইচ্ছা রয়েছে। আপনারা দোয়া করবেন আমার জন্য। আমার নিজের চেষ্টা তো রয়েছেই, সবার দোয়াও কাজে লাগে।
এ ছাড়া মৌসুমী অনুরোধ করেন, মৃত্যুর পর তার ছবিগুলো যেন সবার ফোন থেকে মুছে দেওয়া হয়। এমনকি টিভি চ্যানেলেও যেন ‘ধুমধড়াক্কা’ কোনো ছবি দেখানো না হয়।
মৌসুমী বলেন, যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমার কোনো কাজ মনে হয় যে আর্কাইভে রাখলে ভালো হবে, গবেষণার জন্য প্রয়োজন আছে, তা হলে সে উদ্দেশ্যেই ছবিগুলো সংরক্ষিত হবে। অবশ্যই বাছাই ছবিগুলো আর্কাইভে রাখা হবে, ভালো উদ্দেশ্যে। এ ছাড়া অন্য সব ছবি ডিলিট করে দিলে ভালো হয়।
এই ইস্যুতে কথা বলেছেন আলোচিত ধর্মীয় বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। শুক্রবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মৌসুমী প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। এর আগে এই ইস্যুতে কথা বলেন ইসলামি বক্তা আসসুন্নাহ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমাদুল্লাহ।
মৌসুমীর নাম উল্লেখ না করে মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, আমরা সম্প্রতি বাংলাদেশে এক চিত্রনায়িকার আকুতির কথা শুনেছি। তিনি বলেছেন— আমার মৃত্যুর পর আমার সিনেমা, ভিডিওগুলো ডিলিট করে দেবেন। সারাজীবন পাপের পথে চলে, সারাজীবন এ জাতীয় পাপের কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে শেষ জীবনে এটা বললে কি আসলে ডিলিট হয়। এ সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা বলে কিছুই নেই। আমি চাইলেই কি সব কিছু ডিলিট করতে পারব। তাই আমরা শেষ সময়ে না বুঝে, শালীনতার পথে, সত্যের পথে, কল্যাণের পথে এখন থেকেই যেন থাকি। সময় চলে যাওয়ার পর যেন আমরা না বুঝি।
এই ইসলামী বক্তা বলেন, আমাদের চিত্রনায়িকা যে বোন এ আকুতি পেশ করেছেন, আসলে কি তার পক্ষে গোটাবিশ্বে তার দর্শক-শ্রোতাদের কাছে তার মুভি, ভিডিওগুলোর যে সিন আছে, সেগুলো কি আসলে ডিলিট করা সম্ভব। দেখা যাবে, মৃত্যুর পরও সেগুলো চলতে থাকবে। এ বোনের কথা শুনে, রুপালি পর্দার অন্যান্য বোনেরা, আমরাও যেন একটু উপলদ্ধি করি, আমরা কোন পথে হাঁটছি। আমার কাজ, ক্যারিয়ার কি আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে আছে? এটা দিয়ে কি আসলে গণমানুষের কল্যাণ হচ্ছে। নাকি অশ্লীলতার দিকে ধাবিত হচ্ছি। একটু চিন্তা করি আমরা। একটু চিন্তা করি আমাদের লাইফস্টাইল সম্পর্কে।
তিনি বলেন, মানুষের হৃদয়ে একটি নুর থাকে আর কুরআন একটি নুর। দুই নুর একত্রিত হলে আলোকিত হবে। প্রত্যেকের মধ্যে সেই সত্য আছে। একটু চিন্তা করলেই বেরিয়ে আসবে। সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন। চলচ্চিত্র জগতের পথটা কেমন। তবে শালীনভাবে কোনো কিছু উপস্থাপন করলে ভিন্নকথা। অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে এমন চলচ্চিত্র, এগুলোর জন্য আমরা কি জবাব রেডি করেছি।
মৌসুমীর সে স্টাটাস নিয়ে আজহারী বলেন, আমার যে বোন সোশ্যাল মিডিয়াতে যে আকুতি পেশ করেছেন, তার লাশ যেন কাউকে না দেখানো হয়। মৃত্যুর পর যেন ভিডিও ডিলিট করে দেওয়া হয়। তার (মৌসুমী) দিকে খেয়াল করে অন্যান্য বোন তাদের লাইফস্টাইল নিয়ে একটু ভেবে দেখবেন। আমাদের দেশের অনেক বোনকে দেখেছি এবং ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেক বোনকে দেখেছি, তারা সঠিক পথে ফিরে এসেছেন। অশ্লীলতার পথ থেকে ফিরে এসেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।