প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ২০:২
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লাগাতার তিনদিনের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি দিয়েছে বলে ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ। তিনি আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হয়ে জানান, সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে এবং দ্রুত বাস্তবায়নের পথেও অগ্রসর হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে ছিল ৭০ শতাংশ আবাসন ভাতা চালু করা, বাজেটে নির্ধারিত বরাদ্দ নিশ্চিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন। এই দাবিগুলো নিয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে গিয়ে আলোচনা করে। তবে সেদিন কোনো নিশ্চয়তা না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গত ১৪ মে, যখন ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। এতে আন্দোলন আরও তীব্র রূপ নেয়। শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
শুক্রবার কাকরাইল মোড়ে গণঅনশন কর্মসূচি শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রাজধানীর কেন্দ্রস্থল। আন্দোলনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অ্যালামনাই সদস্যরা।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মাহতাব লিমন জানিয়েছেন, সরকারের এই আশ্বাসে তারা আপাতত কর্মসূচি স্থগিত করছেন। তবে বাস্তবায়নের দিকে নজর থাকবে। চুক্তির কোনো শর্ত ভঙ্গ হলে তারা আবার রাজপথে নামবেন বলে সতর্ক করেন।
সরকারের তরফ থেকে এমন পদক্ষেপে স্বস্তি ফিরেছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। আন্দোলন স্থলে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়। তবে তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, দাবি বাস্তবায়নের পূর্ণ নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি সন্তুষ্ট হওয়া যাচ্ছে না।
এই ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় রচিত হলো। শিক্ষার্থীদের ঐক্য, সাহসিকতা এবং যুক্তিযুক্ত আন্দোলনের ফলেই এ অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ও শান্তিপূর্ণ আচরণের প্রশংসা করেছেন। তারা আশাবাদী, এমন ইতিবাচক ফলাফল ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।