প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১৫:৫৬
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির পক্ষে শিক্ষকদের অবস্থান আরও জোরালো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাস সম্পূর্ণভাবে শাটডাউন থাকবে। বৃহস্পতিবার কাকরাইলে চলমান আন্দোলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক রইস উদ্দিন বলেন, আমরা কোনো ষড়যন্ত্র করতে আসিনি, আমাদের উপস্থিতি আমাদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে। তিনি জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর পুলিশি হামলা শুধু অমানবিকই নয়, এটি এক ধরনের প্রশাসনিক বর্বরতা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছাড়বে না বলে জানিয়ে দেন তিনি।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কাউকে আমাদের অবস্থান থেকে সরাতে এলে পরিণতি ভালো হবে না। আমার শিক্ষার্থীদের চোখের সামনে কেউ আঘাত করলে তা কোনোভাবেই সহ্য করব না।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা একযোগে স্লোগান দিতে থাকেন—আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়, বাজেট কাটছাঁট চলবে না, হামলার বিচার চাই। এসব দাবি তারা আগেই লিখিত আকারে উপস্থাপন করেছেন।
তাদের মূল চারটি দাবি হচ্ছে—আগামী অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু করা, প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট বাস্তবায়ন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস অনুমোদন এবং ১৪ মে পুলিশের হামলার বিচার।
বুধবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক-উপদেষ্টাদের সঙ্গে একত্রে লং মার্চে অংশ নেন। গুলিস্তান ও মৎস্য ভবন হয়ে তারা কাকরাইল পর্যন্ত পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ প্রথমে টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে, পরে ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি ছোড়ে এবং শেষমেশ লাঠিচার্জ শুরু করে।
এই ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। অনেক শিক্ষার্থী এখনো রাস্তায় অবস্থান করছেন। ক্লান্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মধ্যেও কেউ আন্দোলন থেকে সরেননি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলন এখন আর শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের দাবি নয়, এটি শিক্ষাক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রতিরোধ হিসেবে দেখা যাচ্ছে।