দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি জানিয়েছেন, দেশে ছোট ছোট ইসলামী ব্যাংকগুলো একীভূত করে বড় দুটি ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংকগুলোকে নতুন রূপ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এসব ব্যাংকের কার্যক্রম তদারকির জন্য আলাদা আইন ও নিয়ম চালুর কথাও বলেন গভর্নর।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) বার্ষিক ব্যাংকিং সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ব্যাংক খাতের নানা সমস্যা ও সমাধান নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
গভর্নর বলেন, দেশে একটি বড় ইসলামী ব্যাংকের পাশাপাশি ছোট ছোট অনেকগুলো ব্যাংক রয়েছে। এসব ব্যাংকের মধ্যে অনেকেই নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত। তাই এগুলো একীভূত করে দুটি বড় ব্যাংক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংক পরিচালনার জন্য যথাযথ নিয়ম বা রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক এখনো নেই। তাই নতুনভাবে আইন ও তদারকি ব্যবস্থাপনা তৈরি করা হবে। বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুসরণ করেই এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এ সময় গভর্নর বিদায়ী সরকারের আমলে ব্যাংকিং ও নন-ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। যদিও পুরোপুরি অর্থ উদ্ধার সম্ভব না হলেও, অর্থ পাচারকারীদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি করা হবে।
তিনি আরও জানান, যেসব ব্যাংকে অনিয়ম ধরা পড়েছে, সেখানে আমানতকারীদের স্বার্থে পর্ষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ পরিবর্তন করা হয়েছে। আরও ২টি ব্যাংকে পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান গভর্নর।
এছাড়া ব্যাংক কোম্পানি আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার কথাও জানান তিনি। পর্ষদ সদস্য ও স্বতন্ত্র পরিচালকদের জন্য যোগ্যতার মান নির্ধারণের কাজ চলছে।
গভর্নর বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি ব্যাংক খাতে দ্বৈত শাসন নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। যাতে আগেই সমস্যা চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধান করা যায়।
অনুষ্ঠানে বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও নিয়মকানুন নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক ধারণা দিতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।