বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে স্বচ্ছতা এবং উন্নতির জন্য ম্যাটস শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অনির্দিষ্টকাল অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে। তারা অবিলম্বে ১০ম গ্রেডের শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু, কোর্স কারিকুলাম সংশোধন এবং চারটি দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করছে।
প্রথমেই তারা সরকারের কাছে তাদের দাবি জানায়, যেগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি হলো, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য তাদের ভূমিকা ও অবস্থানকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া। এই কারণে, তারা বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) পদে নিয়োগের দাবি জানান।
ম্যাটস শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই তাদের দীর্ঘদিনের দাবির কথা জানিয়েছেন। এক শিক্ষার্থী, মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে ম্যাটসের কোর্সে ভর্তি হয়ে, এখন শুধু অবহেলা আর অবজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছি। আমরা চার বছর ধরে কোনো নিয়োগ পাচ্ছি না। হাজারো গ্রামবাসী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’
আরেক শিক্ষার্থী, হাসান আরিফ বলেন, ‘এগুলো নতুন দাবি নয়। গত ১২ বছর ধরে আমাদের দাবি তোলা হচ্ছে, কিন্তু কিছুই হয়নি। ২০১৭, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালেও আন্দোলন হয়েছিল, তবে তাতে কোনো ফল হয়নি।’ তাদের মূল দাবি হলো, স্বাস্থ্যখাতের জন্য ম্যাটস শিক্ষার্থীদের সঠিক এবং যথাযথ নিয়োগ নিশ্চিত করা।
শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেবার পর, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আহমাদুল্লাহ মানসুর বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার সময় দিয়েছিলাম সরকারের কাছে। কিন্তু তারা আমাদের দাবি মেনে নেয়নি বা যোগাযোগ করেনি, তাই আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
৪ দফা দাবি
ম্যাটস শিক্ষার্থীদের দাবি ৪টি মূল বিষয় নিয়ে গঠিত:
১. বৈষম্য মুক্ত উচ্চশিক্ষা সুবিধা দিতে হবে, বিশেষত স্বাস্থ্যখাতে।
২. উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার শূন্যপদে নিয়োগ দিতে হবে এবং নতুন পদ সৃজন করতে হবে।
৩. ৪ বছরের অ্যাকাডেমিক কোর্স বহাল রেখে, ইন্টার্নশিপ সহ কারিকুলাম সংশোধন করতে হবে।
৪. ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে নতুন একটি বোর্ড গঠন করতে হবে, বর্তমান এ্যালাইড হেলথ প্রফেশনাল শিক্ষা বোর্ড বাতিল করার প্রস্তাবও তুলে ধরেন তারা।
এই দাবির সাথে তারা দাবি করেন, সারাদেশে স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার প্রয়োজন এবং ম্যাটসের স্নাতক শিক্ষার্থীরা যেন সঠিক সময়ে নিয়োগ পায়, তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বন্ধ করা হোক। শাহবাগের এই আন্দোলনে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন।
ম্যাটস শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের দাবি আদায় না হলে, তারা এই আন্দোলন আরও বর্ধিত করার হুমকি দিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।