ব্যবসায়ী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গুলশানের বাসায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে বিপুল পরিমাণ মদ এবং মিনি বারের পাশাপাশি ক্যাসিনোর সরঞ্জামও পাওয়া গেছে। এই ক্যাসিনোটিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় নয়, খেলা হতো মার্কিন ডলারে! যেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের হাইপ্রোফাইলরা খেলতে আসতেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক মোশারফ হোসেন বলেন, সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন ক্যাসিনোতে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এগুলোতে খেলা চলত বাংলাদেশি মুদ্রায়। কিন্তু এই বাসার ক্যাসিনোতে খেলা চলত ডলারের মাধ্যমে। এখানে এক সেন্ট থেকে একশ’ ডলার পর্যন্ত কয়েন পাওয়া যেত। এই কয়েন দিয়েই খেলা চলত। এতেই বোঝা যায়, এখানে হাইপ্রোফাইল মানুষ খেলতে আসতেন।’
এছাড়া ক্যাসিনোটিতে সব ধরনের আধুনিক সুবিধা রয়েছে, এটি খুবই সুসজ্জিত। এখানে মদ থেকে শুরু করে সিসা, গাঁজাসহ সব ধরনের মাদক সরবরাহ করা হতো বলে জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক মোশারফ হোসেন। আজিজের বাড়ি থেকে আটক হওয়া পারভেজ দাবি করেন তিনি এ মাসেই এ বাড়িতে চাকরি নিয়েছেন। আর নবীন জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে আজিজ মোহাম্মদ ভাই দেশে নেই। তার বোন ও ভাই এ বাসার দেখাশোনা করতেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের রহস্যময় ব্যাক্তিদের তালিকা করলে তালিকার প্রথমদিকেই থাকবে যাদের নাম তাদের একজন এই আজিজ মোহাম্মদ ভাই। যাকে নিয়ে আছে নানা গল্প, নানা রহস্য। আর এসব গল্পের বেশিরভাগই চলচ্চিত্র জগতের নারী ও হত্যা কেন্দ্রিক। এসব গল্পের কতটুকু সত্য আর কতটুকু মুখরোচক মিথ্যা সে নিয়েও আছে নানা মত। বর্তমানে থাইল্যান্ডে বসবাসরত রহস্যময় এই বাংলাদেশি ব্যবসায়ী হত্যা ও মাদক পাচারসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অপরাধে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ৫০টির মতো চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন তিনি।
১৯৯৬ সালে প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার বাজার থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিএসইসি। এই শেয়ার কেলেঙ্কারির মামলায় গত বছরের ২৯ আগস্ট আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারি করেন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল। এখন তিনি পলাতক রয়েছেন। ১৯৪৭ এ দেশভাগের পর তাদের পরিবার ভারতের গুজরাট থেকে বাংলাদেশে আসে। ধনাঢ্য এই পরিবার পুরান ঢাকায় বসবাস শুরু করে।
১৯৬২ সালে আজিজ মোহম্মদ ভাইয়ের জন্ম হয় আরমানিটোলায়। আজিজ মোহাম্মদ ভাই তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ইস্পাত প্রযোজকের পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি সার্ক চেম্বার অব কমার্সের আজীবন সদস্য। অলিম্পিক ব্যাটারি, অলিম্পিক বলপেন, অলিম্পিক ব্রেড ও বিস্কুট, এমবি ফার্মাসিটিউক্যাল, এমবি ফিল্ম ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।