প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৫৬
দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকার পর হালট্রিপ কেলেঙ্কারির হোতা এবং সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ তাজবীর হাসান দেশে ফিরে আটক হয়েছেন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে বিশেষ একটি সংস্থা গ্রেপ্তার করে। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা তাকে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করেন।
বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক এসআই আনিসুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আটক তাজবীরকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তার বিরুদ্ধে দেশের গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের সামি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো কার্যক্রমে প্রায়ই নেতিবাচক ধারণা পোষণ করা হয়। তবে মধ্যরাতে তাজবীরকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তাদের কার্যক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে এবং এটি প্রশংসার যোগ্য।
তাজবীর হাসান ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দেশ থেকে পালিয়ে যায়। এরপর তিনি তুরস্ক এবং ভানুয়াতু নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়াও মাল্টার রেসিডেন্সি এবং স্পেনের গোল্ডেন ভিসা রয়েছে বলে জানা গেছে। বিদেশে থাকাকালীন তিনি বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়ীদের ফ্রন্ট কভার হিসেবে দুবাই, স্পেন ও মাল্টায় বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন।
গ্রাহকদের অর্থ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাজবীর ভানুয়াতু ও তুরস্কে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংস্থাকে নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে সহযোগিতা করেছিলেন। এই কারণে তাকে অর্থনৈতিক অপরাধের প্রধান আসামি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বর্তমানে তাকে এয়ারপোর্ট থানায় রাখা হয়েছে এবং আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে। সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থা আশা করছে, তাজবীর থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হবে, যা দেশের আর্থিক ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক হবে।
যারা হালট্রিপের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদেরকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থা প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অভিযোগের যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
এ ঘটনার মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্ষমতা প্রমাণ করেছে এবং আর্থিক অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান দেখিয়েছে। তাজবীর হাসানের আটক দেশের অর্থনৈতিক অপরাধ মোকাবেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।