প্রকাশ: ৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:১৪
রাজধানীর কাফরুলে চাঁদা না দেয়ায় যাত্রীবাহী বাসে গুলি বর্ষণ ও আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনায় জড়িত প্রধান অভিযুক্ত নেছার উদ্দিন ও তার সহযোগী দীপুকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে মিরপুর এলাকার একটি স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে তাদের কাফরুল থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে, যখন মিরপুরের সেনপাড়া এলাকায় আলিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে দেয় চারজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি। তারা প্রথমে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং এরপর যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়। এরপর চাপাতি দিয়ে বাসে কোপ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। পুরো ঘটনাটি এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা মুখে কাপড় বেঁধে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। বাসের চালক ও হেলপারকে পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তের মধ্যেই খবরটি ছড়িয়ে যায় আশেপাশে।
পরে আলিফ পরিবহনের মালিকপক্ষ জানায়, নেছার নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেয়ায় এ হামলা চালানো হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। ঘটনার পরপরই নেছার নিজেই ফোন করে হুমকি দেয়, যা তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ সংগ্রহ করেছে।
যদিও চ্যানেল ২৪-এর কাছে নেছার চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, এই ঘটনায় তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং এটি তাকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে সাজানো একটি পরিকল্পনা। তবে তদন্তকারীরা বলছেন, সিসিটিভি ফুটেজে তার উপস্থিতির বেশ কিছু প্রমাণ মিলেছে।
এর আগে কাফরুল থানায় আলিফ পরিবহনের এক কর্মীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় নেছার উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। পুলিশের ধারণা, সেই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবেই বাসে হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে, যাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
রাজধানীর বাস মালিক সমিতি ঘটনাটিকে পূর্বপরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়েছে। তারা দ্রুত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো পরিবহন শ্রমিক বা মালিক এ ধরনের চাঁদাবাজির শিকার না হয়।