সেভেন সিস্টার্সের ৬০ কিলোমিটার ভেতরে চীনের অনুপ্রবেশ: ভারতে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:২৬ অপরাহ্ন
সেভেন সিস্টার্সের ৬০ কিলোমিটার ভেতরে চীনের অনুপ্রবেশ: ভারতে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সাত রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্সের অন্তর্ভুক্ত অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় ৬০ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে চীনের সামরিক বাহিনী। খবরটি প্রকাশিত হয়েছে দেশটির বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) অরুণাচল প্রদেশের আনজাও জেলার কাপাপু এলাকায় ঢুকে সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করেছে বলে জানা গেছে।


স্থানীয় সূত্রমতে, কাপাপু এলাকায় চীনা সৈন্যদের উপস্থিতির প্রমাণ হিসেবে সেখানে চীনের নাম লিখিত পাথর এবং আগুনে পোড়া কাঠ পাওয়া গেছে। এছাড়াও চীনা খাবারের প্যাকেট এবং অন্যান্য সামগ্রীও সেখানে পাওয়া গেছে। ভারতীয় সামরিক বাহিনী বলছে, এই ঘটনা প্রায় এক সপ্তাহ আগে ঘটেছে এবং এটি ভারতের জন্য উদ্বেগজনক।


ছবিতে দেখা যায়, চীনা সৈন্যরা পাথরের গায়ে ২০২৪ সাল লিখেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতীয় ভূখণ্ডে নিজেদের উপস্থিতি স্থায়ী করার লক্ষ্যে চীনা সামরিক বাহিনী এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। চীনা সৈন্যদের এমন অনুপ্রবেশের খবর জানার পর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠেছে।


চীনের সামরিক বাহিনী পূর্বেও অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে অনুপ্রবেশ করেছে। ২০২২ সালের আগস্টে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত একটি ছবিতে দেখা যায়, চীনের সৈন্যরা হাদিগ্রা হ্রদের কাছে নির্মাণ কাজ পরিচালনা করছে। এছাড়াও ২০২১ সালে স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চীনা সামরিক বাহিনী ভারতীয় ভূখণ্ডের ভেতরে অন্তত ৬০টি ভবনের একটি ক্লাস্টার নির্মাণ করছে।


অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলমান। চীন বরাবরই অরুণাচল প্রদেশের বিশাল অংশকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করে আসছে। ভারত-চীন সীমান্তের প্রায় ৩,৪৮৮ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে বিরোধপূর্ণ এলাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা বিরাজ করছে অরুণাচল প্রদেশের ১,১২৬ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে।


ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনের এই অনুপ্রবেশের ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য নতুন করে চাপ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে অরুণাচল প্রদেশের মতো কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চীনা সৈন্যদের এই ধরনের কার্যক্রম ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতীয় প্রশাসন এবং সামরিক বাহিনী কড়া নজরদারি এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


সূত্র: অরুণাচল টোয়েন্টি ফোর, নিউজফাই, এনডিটিভি