ভোটে ৪০ ভাগের কম হলে বাতিলের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌরভ নূর , বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২১শে জানুয়ারী ২০২৫ ১১:৫০ পূর্বাহ্ন
ভোটে ৪০ ভাগের কম হলে বাতিলের সুপারিশ

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে নতুন প্রস্তাব এসেছে, যেখানে কোনো আসনে ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে সেই নির্বাচন বাতিল হবে বলে সুপারিশ করেছেন কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ তথ্য জানান। বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এই প্রস্তাব কোনো রাজনৈতিক বা অসৎ উদ্দেশ্যে নয়, বরং নির্বাচনী অঙ্গনকে সুষ্ঠু ও দুর্নীতিমুক্ত করার লক্ষ্যে করা হয়েছে। এর সঙ্গে গুম, খুন বা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ বন্ধের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।  


কমিশনের মতে, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন, এবং ৪০ শতাংশের কম ভোট পড়লে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থায় যে সংস্কার প্রয়োজন তা দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত হচ্ছে, তবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কমিশন চায় একটি ন্যায়ভিত্তিক ও সবার জন্য গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হোক।  


নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা নিয়েও কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, গুম, খুন বা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বা দোষী প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া। এ ছাড়া প্রার্থীদের জন্য নৈতিক ও আর্থিক স্বচ্ছতার মানদণ্ডও নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।  


এ ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কমিশন প্রধান। তিনি বলেন, নির্বাচন কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য নয়, বরং এটি হতে হবে সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন।  


কমিশনের এই প্রস্তাবগুলো কবে থেকে কার্যকর হতে পারে সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করা হয়নি। তবে বদিউল আলম মজুমদার জানান, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং তা শিগগিরই চূড়ান্ত হবে।  


এই প্রস্তাবনা বাস্তবায়িত হলে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এটি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে এবং নির্বাচনে দুর্নীতির প্রবণতা কমাবে।  


কমিশনের এই উদ্যোগে বিভিন্ন মহল থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ এটিকে ইতিবাচক বলে স্বাগত জানাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ মনে করছেন এটি রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে। তবে কমিশন প্রধান আশাবাদী, জনগণ এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানাবে।  


বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার একটি বহুপ্রত্যাশিত বিষয়। এই প্রস্তাব কার্যকর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন ধরনের শুদ্ধি অভিযান শুরু হতে পারে। তবে এর জন্য প্রয়োজন সকল পক্ষের সহযোগিতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা।